Thank you for trying Sticky AMP!!

মায়ের কোলে ফিরতে পারবে তো সুজন

সুজন। রাউজান, চট্টগ্রাম, ১৭ নভেম্বর। ছবি: এস এম ইউসুফ উদ্দিন

ছোট্ট শিশু সুজন (৬)। বাবার সঙ্গে এসেছিল চট্টগ্রামের রাউজানে। দুপুরে বাবা-ছেলে উপজেলার একটি রেস্তোরাঁয় ভাত খায়। বাবা দুজনের খাওয়ার বিল পরিশোধ করেন। এরপর সুজনকে রেস্তোরাঁয় বসিয়ে বের হয়ে যান।

ওই জায়গায় চুপটি করে বসে থাকে সুজন। এভাবে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়। একসময় বিকেল শেষে নেমে আসে সন্ধ্যা। অনেক মানুষের আনাগোনা চলতে থাকে রেস্তোরাঁয়। সুজনের চোখ এই ভিড়ে খুঁজে ফেরে শুধুই বাবাকে। দীর্ঘ সময় বাবাকে না দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে সুজন। এরপর রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়।

এ ঘটনা তিন দিন আগের। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পথেরহাট বাজারের একটি রেস্তোরাঁয়।

পুলিশে খবর দেওয়ার পর সুজনের আশ্রয় হয়েছে রাউজান থানার নারী আবাস ভবনে। তিন দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো সুজনের কোনো স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রাউজান থানার পুলিশ।

থানায় গিয়ে আজ রোববার বিকেলে দেখা যায়, দুরন্ত সুজন নারী কনস্টেবলদের বাসায় খেলছে। এদিক সেদিক দৌড়াচ্ছে। থানা যেন তার কত কালের চেনা। কিছুক্ষণ পরপর থানার প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তাদের এ-কক্ষ ও-কক্ষ ঘুরে বেড়াচ্ছে। থানার ওসি কেপায়েত উল্লাহসহ কর্মকর্তারা সবাই তাকে আদর করে কাছে টেনে নিচ্ছেন। সুজনকে এক জোড়া নতুন কাপড় কিনে দিয়েছেন নারী কনস্টেবল শামীমা আকতার।

তিন দিন ধরে থানার পুলিশের হেফাজতে আছে সুজন। রাউজান থানা আঙিনা, রাউজান, চট্টগ্রাম, ১৭ নভেম্বর। ছবি: এস এম ইউসুফ উদ্দিন

রাউজান থানার পুলিশ ও নোয়াপাড়া পথেরহাট বাজারের ওই রেস্তোরাঁর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুজনকে নিয়ে ৪০ থেকে ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি শুক্রবার দুপুরে হোটেলে ভাত খান। খাওয়ার বিলও পরিশোধ করে তিনি। এরপর শিশুটিকে রেখে চলে যান। পরে আর আসেননি।

পুলিশ বলছে, সুজন জানিয়েছে, তার বাবার নাম জজ মিয়া। মায়ের নাম চম্পা। গ্রামের বাড়ি সিলেট। থাকে সিএনবি এলাকায়। তার বড় দুই ভাই ও দুই বোন আছে। বাবা জজ মিয়ার সঙ্গেই সে এখানে আসে। বাবা তাকে ফেলে চলে গেছেন।

সুজন প্রথম আলোকে বলে, সে মায়ের কাছে যেতে চায়।

কনস্টেবল শামীমা আকতার বলেন, ‘ছেলেটা খুব চঞ্চল। তিন দিনেই সে আমাদের মায়ায় জড়িয়ে ফেলছে।’

রাউজান থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা উপপরিদর্শক নুর নবী আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটি থানা হেফাজতে আছে। দেশের সব থানায় সুজনের বার্তা ও ছবি পাঠানো হয়েছে। কোনো স্বজনের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা সুজনকে বাবা-মায়ের কোলে তুলে দিতে কাজ করছি।’