
সোমবার রাত আটটা। গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা থেকে দক্ষিণ দিকে গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় সব দোকানপাট খোলা। রাস্তায় বেড়েছে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বেশ কিছু যানবাহন। লোকজন জানিয়েছেন, এটি এখন নিত্যদিনের চিত্র।
মাওনা চৌরাস্তা থেকে তিন কিলোমিটার দক্ষিণে সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে আনসার রোড এলাকায় মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় সব ধরনের দোকানপাটে স্বাভাবিক বেচাকেনা চলছিল। এ সময় সেখানে বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে ছুটি হচ্ছিল। কিছু শ্রমিকবাহী বাস শ্রমিকদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে ফেরার সময় যাত্রী পরিবহন করে। সড়কে চলাচল করা সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলোয় ভ্রমণ করা যাত্রীদের বেশির ভাগের মুখেই মাস্ক নেই।
আনসার রোডের দক্ষিণে গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ির চিত্র আরও ভয়াবহ। এ সময় সেখানে মহাসড়কে শ্রমিকসহ সাধারণ পথচারীর সংখ্যা দিনের অন্যান্য সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি দেখা গেছে। মাস্কবিহীন চলাচলে বোঝার উপায় নেই যে সেখানে কঠোর লকডাউন চলছে। অথচ দিনের বেলায় এসব এলাকায় দোকানপাট বন্ধ না রাখা ও মাস্ক না পরার কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে জরিমানাও গুনতে হয়।
গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি এলাকায় হাসিনুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, দিনের তুলনায় রাতের বেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি কম থাকে। তাই লোকজনের মধ্যে লকডাউনের বিধিনিষেধ মানার প্রবণতা কমে যায়। মো. জসিম উদ্দিন নামের একজন বলেন, কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ার প্রথম দুই–এক দিন সবাই দোকানপাট খুলতে ভয় পেয়েছেন। কিন্তু সেই ভয় আস্তে আস্তে কেটে যাচ্ছে।
মজিবুর রহমান নামের এক শ্রমিক বলেন, কারখানায় কাজ করার সময় সবাই মাস্ক পরেন। কিন্তু ছুটির পর অনেকেই মাস্ক পকেটে রেখে বাড়ি ফেরেন। রাতেই বেশি অনীহা দেখা যায় তাঁদের মধ্যে। রবিউল আলম নামের আরেক শ্রমিক বলেন, এ সময় কারখানা ছুটি হয়, শ্রমিকদের তো কেনাকাটা করার দরকার আছে। তাই দোকানপাট খোলা রাখেন হয়তো। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক সোহেল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, লকডাউন থাকলেই কী? খাইয়া বাঁচতে তো হইব। আর গাড়ি না চালাইলে মানুষ চলব কেমনে।
১নং সিঅ্যান্ডবি এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন বলেন, অনেকেই সন্ধ্যার পর দোকান খোলেন, তাই তিনিও খোলা রেখেছেন। দোকান খোলা রাখলেও ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। দোকানদারদের জীবন চালানোই কষ্টকর হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, মাস্ক ব্যবহারসহ লকডাউনের বিধিনিষেধ মানার জন্য বিভিন্নভাবে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। রাতের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।