Thank you for trying Sticky AMP!!

শান্তি প্রস্তাবের পর এবার ‘সশস্ত্র’ হওয়ার হুমকি কাদের মির্জার

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা

শান্তির প্রস্তাব দেওয়ার ৩৫ ঘণ্টার মাথায় আবারও ফেসবুক লাইভে এসে ‘সশস্ত্র’ হওয়ার হুমকি দিয়েছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ১২ মিনিটে অনুসারী স্বপন মাহমুদের ফেসুবকের লাইভে এসে কাদের মির্জা এ হুমকি দিয়েছেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা গত মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভে তাঁর অনুসারী নাজিম উদ্দিন ওরফে মিকনকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে ‘হত্যার বদলে হত্যার’ হুমকি দিয়েছিলেন। এরপর গতকাল বুধবার ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে আরেকটি লাইভে কোম্পানীগঞ্জের শান্তি ফিরিয়ে আনতে অনেকগুলো প্রস্তাব তুলে ধরেন।

আজ ৮ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের লাইভ ভিডিওতে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘গত পরশু (প্রকৃতপক্ষে গতকাল বুধবার) সাহরির সময় কোম্পানীগঞ্জের শান্তির জন্য একটা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। করোনা থেকে কোম্পানীগঞ্জের মানুষকে রক্ষা করার জন্য একটি পদক্ষেপ আমি নিয়েছি। সেটি আপনারা শুনেছেন। কিন্তু আজকে আমার সেই প্রস্তাবে প্রশাসন এবং ওবায়দুল কাদের, তাঁর স্ত্রী, একরাম-নিজামের... (গালি), অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এবং এখানকার প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা একরাম-নিজামের (সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী ও সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী) ... আমার প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে আমার ছেলেদেরকে গ্রেপ্তার করছে।’

সেতুমন্ত্রীর ভাই আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি ছেড়ে দিব না। আমার ছেলেকে এইভাবে আহত করার পর তারা বাড়িতে কীভাবে বসে বসে মিটিং করে? দিনরাত তারা সেখানে আড্ডা দেয়, প্রত্যেকটা ছেলের হাতে অস্ত্র। অস্ত্র নিয়ে তারা থানায় যায়, অস্ত্র নিয়ে ওসির সামনে বসে থাকে। এই অবস্থা এখানে চলছে। এই অবস্থা যদি চলতে দেয়, আমরা বসে থাকব না। আমরাও সশস্ত্র হব অজস্র মৃত্যুতে।’

লাইভে কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি অসুস্থ। এ অবস্থায় রাজু নামের একটা ছেলে, সে ত্যাগী কর্মী আমার দলের। তাকে আমার পৌরসভার ক্যাম্পাস থেকে গ্রেপ্তার করে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। গত তিন দিনে আমাদের প্রায় ১০ জন ছেলেকে ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। আমি দেখার জন্য সেখানে গেলে শামীম (সদর সার্কেলের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মো. শামীম কবির) এবং ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর জাহেদুল হক) আমার গায়ের ওপর হাত দিয়েছে। প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেও কোনো প্রতিকার পাইনি।’

কাদের মির্জা অভিযোগ করেন, ‘আজকে আমার ছেলের ওপর আঘাত করল, পিটিয়ে তার মাথা চৌচির করে ফেলেছে। আজকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে অবস্থান করছে। সে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। লকডাউনের কারণে ঢাকায় যেতে পারছে না। তার ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আজও আমার ছেলেদেরকে গ্রেপ্তার করেছে। ...(গালি) ওসি, এই ওসি রাহাইত্তার (ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত) টাকা খায়, রাহাইত্তা ওসির চেম্বারে বসে থানা নিয়ন্ত্রণ করে। সে রাজুকে বলেছে তোমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি এক কোটি টাকা খরচ করব। সে কাজটা করেছে। তার কথায় থানা ওঠে আর বসে।’

কাদের মির্জা তাঁর অনুসারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি আমার কর্মীদের বলব, আমি শান্তির প্রস্তাব দিয়েছি। আমি আজকের দিন দেখব, আজকের দিন দেখার পর তোমাদের আগামী দিন সিদ্ধান্ত দিব। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে রাজপথে আমিও থাকব। আমি দেখব, কোথাকার পুলিশ, প্রশাসন কী জিনিস, আমি দেখব। প্রয়োজনে জেলে যাব, জীবন উৎসর্গ করব।’

কাদের মির্জার ছেলের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করে তাঁর অনুসারীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কাদের মির্জার অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। তাঁর ছেলে আহত হওয়ার ঘটনায় হওয়া মামলায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি সবকিছু জেনেও লাইভে এসে প্রতিদিন মিথ্যাচার করেন।

Also Read: ‘হত্যার বদলে হত্যা’ ঘোষণার পরের দিন শান্তির প্রস্তাব কাদের মির্জার