Thank you for trying Sticky AMP!!

শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবিতে উদ্ধার হলো ১০ জনের লাশ, অভিযান স্থগিত

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে এই লঞ্চটি ডুবে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজ রূপসী-৯-এর ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসারউদ্দিন ডুবে যাওয়ার ঘটনায় আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ শাহ্ সিমেন্ট এলাকা থেকে মোসলেম উদ্দিন (৫৫) নামের ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে সকালে শাহ সিমেন্ট এলাকা ও হরিহরপুর এলাকা থেকে দুটি লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। এ নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হলো ১০। এ ঘটনায় নিখোঁজের তালিকায় আর কেউ না থাকায় উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেছে নৌ পুলিশ।  

নিহত মোসলেম উদ্দিনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের ইসলামপুরে জীবনীঘাট এলাকায়। তিনি কুয়েতপ্রবাসী ছিলেন। সকালে উদ্ধার করা হয়েছিল চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের বিষ কাঁঠালী এলাকার আবদুল্লাহ আল জাবের (৩২) ও মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার জয়রামের সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে আরোহী রাজবংশীর লাশ। গতকাল সোমবার নৌ পুলিশের দেওয়া মৃতের তালিকায় অজ্ঞাতনামা একটি লাশ যুক্ত করা হয়। পরে জানা যায়, তাঁর নাম জিয়াউল আমিন রিমন। তিনি লঞ্চ দুর্ঘটনায় মারা যাননি। ওই ব্যক্তির লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মোসলেম উদ্দিনের লাশ নিতে এসেছিলেন তাঁর মেয়ের শ্বশুর মো. মাঈনউদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে জানান, এক মাস আগে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন মোসলেম উদ্দিন। লঞ্চে উঠে তিনি বাড়িতে ফোন করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে এলাকার একজন লঞ্চে উঠেছিলেন। তিনি পানি পানের জন্য লঞ্চ থেকে নামলে লঞ্চ ছেড়ে দেয়। তাঁর কাছ থেকেই পরিবার জানতে পারে দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চটিতে মোসলেম উদ্দিন ছিলেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ্ আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, লঞ্চডুবির ঘটনায় পৃথক দুটি স্থান থেকে মঙ্গলবার শিশুসহ তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশগুলো নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই ঘটনায় আরও কেউ নিখোঁজ আছেন কি না, জানতে চেয়ে মাইকিং করব। যদি কেউ নিখোঁজ না থাকেন, তাহলে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হবে।’

নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, লঞ্চডুবির ঘটনায় শিশুসহ মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। যেহেতু আর কোনো নিখোঁজের তথ্য নেই, তাই উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেছে তাঁরা।

Also Read: শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবির ঘটনায় কার্গোর মাস্টারসহ ৮ জনের নামে মামলা

গত রোববার বেলা আড়াইটার দিকে নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন কার্গো রূপসী-৯-এর ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবে যায়। বেশির ভাগ যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও নিখোঁজ ছিলেন কয়েকজন। আজ সকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় দুই শিশুসহ ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের হোসেনদি এলাকা থেকে গতকালই কার্গো রূপসী-৯ জব্দ করেছে নৌ পুলিশ। কার্গোর মাস্টারকে আটক করা হয়েছে।

লঞ্চডুবির ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শামীম ব্যাপারীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বজলুর রশিদকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Also Read: ‘আমারে খালি কইরা থুইয়্যা গেলি রে মা’

এর আগে গত বছরের ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর কয়লাঘাট এলাকায় এসকেএল-৩ কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল সাবিত আল হাসান ডুবে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়।