সিলেটের জৈন্তাপুরে শাপলা বিলের বিভিন্ন অংশে কচুরিপানায় ঢাকা পড়েছে লাল শাপলা। সম্প্রতি উপজেলার ডিবিরহাওর এলাকায়
সিলেটের জৈন্তাপুরে শাপলা বিলের বিভিন্ন অংশে কচুরিপানায় ঢাকা পড়েছে লাল শাপলা। সম্প্রতি উপজেলার ডিবিরহাওর এলাকায়

কচুরিপানায় ঢাকা পড়ছে লাল শাপলা বিলের সৌন্দর্য

নরম রোদে ঝলমল করে লাল লাল শাপলায় ভরা বিল। মেঘালয়ের পাহাড়ঘেঁষা সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চারটি বিলে শীত মৌসুম এলেই ফুটে ওঠে হাজারো শাপলার হাসি। আর সেই হাসি দেখতে ছুটে যান প্রকৃতিপ্রেমীরা। কিন্তু চলতি মৌসুমে বদলে গেছে বিলগুলোর দৃশ্যপট। একসময় বিলগুলোতে শুধু লাল শাপলার আধিপত্য ছিল, তবে সেখানে দখল নিতে শুরু করেছে কচুরিপানা।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার ভাষ্য, ধীরে ধীরে শাপলার সৌন্দর্যকে আড়াল করে বিলের পানিতে ছড়িয়ে পড়ছে কচুরিপানা। এটি চলতে থাকলে বিলগুলোকে পুরোপুরি গ্রাস করবে আগ্রাসী কচুরিপানা।

জৈন্তাপুর উপজেলার ডিবিরহাওরে প্রায় ৯০০ একর জায়গাজুড়ে শাপলা বিলের অবস্থান। স্থানীয় বাসিন্দারা বিলের চারটি অংশকে ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকেন। এগুলো হলো ইয়াম বিল, হরফকাটা বিল, ডিবি বিল ও কেন্দ্রী বিল। ২০১৫ সালে প্রথম আলোতে ছবিসহ ‘লাল শাপলার হাসি’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের পর বিলটি বেশ পরিচিতি পায়। শীত মৌসুম এলেই দেশি-বিদেশি পর্যটক সেখানে ঘুরতে যান এবং বিলের সৌন্দর্যে মুগ্ধতা নিয়ে ফেরেন।

সম্প্রতি দেখা গেছে, ইয়াম বিলে শাপলার পরিবর্তে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে কচুরিপানা। কচুরিপানায় আড়াল হচ্ছে লাল শাপলাগুলো। অন্য বিলগুলোর অবস্থাও তেমন ভালো নয়। সেখানেও ছড়াচ্ছে আগ্রাসী কচুরিপানা।

বিলের এখানে-সেখানে জায়গা দখল করেছে কচুরিপানা

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লাল শাপলা বিলের সুরক্ষায় শাপলা বিল সুরক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এ জন্য বিলে পর্যটকবাহী প্রতিটি নৌকা থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করে। কিন্তু শাপলা বিলটি কচুরিপানায় ভরলেও কমিটির কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি। এমন অবস্থায় আগামী বছর শাপলা বিল কচুরিপানা বিলে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

এ বিষয়ে শাপলা বিল সুরক্ষা কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর বিলে কচুরিপানা পরিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু কচুরিপানাগুলো দ্রুত বাড়ে। এর ফলে আবার কচুরিপানা ছড়িয়েছে। চলতি বছর পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে শাপলা বিল পর্যটনকেন্দ্রের গোলঘরসহ সড়কটি পাকা করার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাঁর দাবি, শাপলার বিলের মূল অংশে কচুরিপানা নেই। বিলের প্রবেশমুখে কচুরিপানার দেখা মেলে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছে।

ইউএনও জর্জমিত্র চাকমা বলেন, কচুরিপানাগুলো বিলের মূল অংশে ছড়ায়নি, তবে কচুরিপানা দ্রুত বাড়ে। তাই এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।