
গত দুই দিনের বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার আঘাতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ৫৩টি স্থানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার আঘাতে ১ হাজার ৪০০টির বেশি রোহিঙ্গা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাটির দেয়াল ধসে একজন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। বজ্রপাতে আহত হয়েছেন ১১ জন।
আজ সোমবার বিকেলে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএনএইচসিআর কক্সবাজার শাখা থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়। ইউএনএইচসিআর অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিনিধি জুলিয়েট মুরেকেইসনি বলেন, মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় (আশ্রয়শিবির) বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আর ঝোড়ো হাওয়া বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে তৈরি ঘরগুলোকে আরও দুর্বল করে তুলছে।
জুলিয়েট মুরেকেইসনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরে স্বেচ্ছাসেবকেরা সহায়তা করছেন। কিন্তু আশ্রয়ের জন্য আমাদের আরও জায়গা দরকার। বর্ষার আগেই শরণার্থীশিবিরে আশ্রয়ের জায়গা কমে গিয়েছিল। বিশেষ করে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার শিকার হয়ে গত কয়েক মাসে হাজার হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকেই আগে পালিয়ে আসা আত্মীয়স্বজনের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। যাঁরা নিজেরাই নিজেদের ঘরকে শুকনা রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’
কক্সবাজারে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং আশপাশের বাংলাদেশি জনগণ এমন একটি এলাকায় বাস করছেন, যেখানে বন্যা, ভূমিধস, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুযোগের ঝুঁকি সব সময় থাকে। এই দুর্যোগের প্রস্তুতি নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ বছর অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।
২০২৫ সালে মানবিক সহায়তাকারী সংস্থাগুলো প্রায় ১৪ দশমিক ৮ লাখ মানুষকে সহায়তা করতে ৯৩ দশমিক ৪ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল চেয়েছে। যার মধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং আশপাশের বাংলাদেশি জনগণ অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়ে গোয়েন লুইস বলেন, ‘বছরের মাঝপথে পৌঁছে যাওয়া সত্ত্বেও এখনো ২০ শতাংশের কম অর্থায়ন এসেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করব। কিন্তু এই কঠিন সময়ে আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবহেলা করতে পারি না। এই দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য আমরা জরুরিভাবে দাতাদের উদাত্ত আহ্বান জানাই, তারা যেন উদারভাবে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন।’