জয়পুরহাট জেলার মানচিত্র
জয়পুরহাট জেলার মানচিত্র

এসপি-ওসির বিরুদ্ধে মামলা, সেই এসআইকে থানা থেকে প্রত্যাহার

স্বামীর মুঠোফোন ও ল্যাপটপ আটকে রাখার অভিযোগে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) নিশাত এ্যাঞ্জেলা, গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম তালুকদারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন জয়পুরহাটের কালাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামানের স্ত্রী মোছা. কাজলী খাতুন। এ ঘটনার পর এসআই মনিরুজ্জামানকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

এসআই মনিরুজ্জামানের দাবি, মামলা করার কারণে তাঁকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ লাইনসে যোগদান করেছেন। স্ত্রীর করা মামলাকে ঘিরে তাঁকে অযথা হয়রানি করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব প্রথম আলোকে বলেন, প্রশাসনিক কারণে কালাই থানার এসআই মনিরুজ্জামানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসআই মনিরুজ্জামান একসময় গাইবান্ধা সদর থানায় কর্মরত ছিলেন। পরে তাঁকে রাজশাহী রেঞ্জে বদলি করা হয়। পরে তিনি জয়পুরহাটের কালাই থানায় যোগদান করেন।

২২ অক্টোবর মনিরুজ্জামানের মুঠোফোন ও ল্যাপটপ আটকে রাখার অভিযোগে তাঁর স্ত্রী কাজলী খাতুন বাদী হয়ে গাইবান্ধা আমলি আদালতে (সদর) স্বামীর সাবেক কর্মস্থল গাইবান্ধার এসপি নিশাত এ্যাঞ্জেলা, গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম তালুকদার ও তারেকুজ্জামান তুহিন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর মধ্যে তারেকুজ্জামান এসআই মনিরুজ্জামানের আত্মীয় হন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আরজিতে কাজলী খাতুন উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী গাইবান্ধা সদর থানায় কর্মরত ছিলেন। আসামি তারেকুজ্জামান পারিবারিক পূর্বশত্রুতার জেরে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে ফেসবুকে ছবি প্রকাশ করেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছরের ২৫ মার্চ মনিরুজ্জামানকে তাঁর কার্যালয়ে ডাকেন পুলিশ সুপার। তিনি কার্যালয়ে ঢোকামাত্র তাঁর কাছ থেকে মুঠোফোন, ল্যাপটপ ও ১৩ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। পরে মুঠোফোন ও ল্যাপটপ যাচাই-বাছাই শেষে সদর থানার ওসির কাছে রাখা হয়। এ সময় বিষয়টি বাইরে প্রকাশ করলে তাঁর চাকরির ক্ষতি হবে বলে ভয় দেখানো হয়। একপর্যায়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁকে গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী রেঞ্জে বদলি করা হয়। পরে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুঠোফোন ও ল্যাপটপ উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিষয়টি তিনি তাঁর পরিবারকে জানান।

তবে ওসি শাহিনুর ইসলাম তালুকদার গতকাল প্রথম আলোকে বলেছিলেন, মনিরুজ্জামানের এক আত্মীয় ফেসবুকে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালান। বিষয়টি শোনার পর পুলিশ সুপার তাঁকে (মনিরুজ্জামান) নিজের কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। মনিরুজ্জামান অপপ্রচারের বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে তাঁর মুঠোফোন ও ল্যাপটপ পরীক্ষার জন্য সিআইডি পুলিশের কাছে পাঠানো হয়। সিআইডির রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।