রাজশাহীতে যুবলীগ নেতার বাড়িতে গতকাল শনিবার হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার বিকেলে নগরের কাজলা এলাকায়
রাজশাহীতে যুবলীগ নেতার বাড়িতে গতকাল শনিবার হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার বিকেলে নগরের কাজলা এলাকায়

রাজশাহীতে যুবলীগ নেতার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর

রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেদ হাসানের (বিপ্লব) বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেছে একদল দুর্বৃত্ত। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে নগরের মতিহার থানার কাজলা বউবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

হামলাকারীরা দেশি অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে ঢুকে আসবাবপত্র, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তছনছ করে এবং পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে এ হামলা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের। এ ঘটনায় যুবলীগ নেতার মা-বাবা আতঙ্কে আছেন।

কাঁদতে কাঁদতে গতকাল রাতের ঘটনার বর্ণনা দেন যুবলীগ নেতার মা মোসা. খালেদা (৪৫)। তিনি বলেন, রাত ১১টার দিকেও ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর তাঁদের নিচতলার ভাড়াটে ফোন করে জানান, কেউ ফটক খোলার চেষ্টা করছে। তিনি ব্যালকনিতে গিয়ে দেখেন, কয়েকজন দৌড়ে আসছে। কিছু বুঝে ওঠার আগে তারা বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা ও বাতি ভাঙতে শুরু করে। পরে ফটকের তালা ভেঙে ফেলে।

মোসা. খালেদা আরও বলেন, ‘ওরা লাফিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আমি হাতজোড় করে বলি, আমার অনেক কষ্টের সংসার, তোমরা ভাঙচুর কোরো না। কিন্তু ওরা কোনো কথাই শোনেনি। ওরা আমাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাতও করেছে।’

হামলাকারীরা যাওয়ার সময় বাড়ির দেয়ালে একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়

হামলাকারীরা এক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায়। বাড়ির দুটি রেফ্রিজারেটর, দুটি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, তিনটি টেলিভিশন, চারটি ফ্যান, দুটি ওভেন, আলমারি, খাটসহ প্রায় সব আসবাব ভাঙচুর করেছে। দোতলা বাড়ির নিচে গ্যারেজে থাকা তিনটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় লোকজন বলেন, রাত ১২টার দিকে কয়েক শ লোক খালেদ হাসানের বাড়ির আশপাশে অবস্থান নেন। পরে এলাকার বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন আসতে থাকলে হামলাকারীরা তাঁদের ধাওয়া দেয়। পরে আর কেউ আসার সাহস পাননি।

খালেদের বাবা মো. হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবার মুখ বাঁধা ছিল। হাতে ছিল বড় বড় রামদা, হাতুড়ি, পিস্তল। ঘরে ঢুকেই তারা ভাঙচুর শুরু করে আর অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। আমরা ভয়ে ঘরের এক কোণে লুকিয়ে ছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে দল করে এটাই তার অপরাধ। ৫ আগস্টের পর ভয়ে ছেলেটা বাড়িতে আসে না। তারপরও আমাদের ওপর এমন অত্যাচার হলো।’

খবর পেয়ে রাতে মতিহার থানা-পুলিশ ও আজ রোববার গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক বলেন, ঘরের আসবাবসহ বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি করে গেছে। ওই পরিবারের ছেলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। এ কারণে হামলা হয়েছে বলে তাঁদের মনে হয়। এ ব্যাপারে তাঁদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।