ফরহাদ ব্যাপারীকে হত্যাচেষ্টার আগে পাশের ঘরের বারান্দায় খোঁড়া হয়েছিল গর্ত
ফরহাদ ব্যাপারীকে হত্যাচেষ্টার আগে পাশের ঘরের বারান্দায় খোঁড়া হয়েছিল গর্ত

শ্বশুরবাড়িতে গলা কেটে হত্যাচেষ্টা

স্ত্রী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা, ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ফরিদপুরের সদরপুরে শ্বশুরবাড়িতে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এজাহারে বলা হয়েছে, জমি কেনার টাকা আত্মসাতের জন্য তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ব্যক্তির স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম ফরহাদ ব্যাপারী ওরফে ঠান্ডু (৩৫)। তিনি সদরপুর উপজেলার ছলেনামা এলাকার ব্যাপারীডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা। ঢাকায় তাঁর একটি ওয়ার্কশপের ব্যবসা রয়েছে। গত শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার মুন্সি গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ব্যক্তির স্ত্রী লাবনী আক্তারকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর তাঁর শাশুড়ি শাহিদা বেগম (৩৮) ও দাদিশাশুড়ি জনকী বেগম (৬২) পলাতক। মামলায় ওই তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আজ রোববার বেলা পৌনে ১১টার দিকে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকদেব রায় প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় ফরহাদ ব্যাপারীর স্ত্রী লাবনী আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে। অন্য দুই পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তির গলার খত গভীর নয়। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্ত্রী, শাশুড়ি ও দাদিশাশুড়ি ফরহাদ ব্যাপারীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে গলা কেটে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁর ঘুম ভেঙে গেলে তিনি চিৎকার–চেঁচামেচি শুরু করেন। তখন এলাকাবাসী এগিয়ে আসেন। একপর্যায়ে তাঁর স্ত্রী, শাশুড়ি ও দাদিশাশুড়ি পালিয়ে যান। তবে রাতে অভিযান চালিয়ে স্ত্রী লাবনী আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ফরহাদ ব্যাপারীর ঢাকায় একটি ওয়ার্কশপ ব্যবসা পরিচালনা করেন। তিনি টাকা জমিয়ে ১১ লাখ টাকা জমি কেনার জন্য স্ত্রী ও শাশুড়িকে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা জমি না কিনে তাঁকে হত্যা করে টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যেই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

ভাষানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ গোলাম কাউছার বলেন, ওই ঘটনা শুনে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। যেভাবে আগে থেকে কবর খুঁড়ে, ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ফরহাদকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল, এ–জাতীয় ঘটনা এলাকায় আগে কখনো ঘটেনি। অন্য কোথাও ঘটেছে বলে তিনি শোনেননি। এ ঘটনার পর এলাকাবাসী ওই পরিবারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন।