বান্দরবানের আলীকদম সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে একজন মিয়ানমারের নাগরিক নিহত ও একজন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির লাশ ঘটনাস্থলেই রয়েছে, আর আহত ব্যক্তি বাড়ি ফিরেছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে বিজিবি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
এর এক দিন আগে, রোববার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে একজন বিজিবি সদস্য আহত হন। ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই আলীকদম সীমান্তে নতুন করে হতাহতের ঘটনা ঘটল। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এর আগে এ এলাকায় মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি।
কক্সবাজারের রামু ৩০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কাজী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, নিহত মেনথাং ম্রো (৪০) এবং আহত মাংছার ম্রো (৩০) ৫৫ নম্বর সীমান্ত পিলারের পশ্চিম পাশে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে হটাও মগপাড়া এলাকায় জুম দেখার জন্য যাচ্ছিলেন। পথে মাইন বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মেনথাং ম্রো মারা যান। তিনি মিয়ানমারের নতুনপাড়ার বাসিন্দা। তাঁর লাশ এখনো ঘটনাস্থলে রয়েছে। আহত মাংছার ম্রোর বাড়ি বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের গর্জনপাড়া এলাকায়। তিনি আহত অবস্থায় ফিরেছেন এবং তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে মেনথাং ম্রোর পরিবার সীমান্তঘেঁষা ইয়ংরিংপাড়ায় সাময়িকভাবে আশ্রয় নিয়েছিল। তিনি মাংছার ম্রোকে সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারের নিজের জুমঘর থেকে ধান আনতে গিয়েছিলেন। পথে মাইন বিস্ফোরণে তিনি নিহত হন। তাঁর লাশ উদ্ধারে ইয়ংরিংপাড়ার লোকজন চেষ্টা করছেন। আহত মাংছার ম্রো পেটে আঘাত পেয়েছেন, তবে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়।
চেয়ারম্যান ক্রাতপুং আরও বলেন, কুরুকপাতা ইউনিয়নের ইয়ংরিংপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থিত। স্থানীয় লোকজন সীমান্তের উভয় পাশে জুমচাষ করেন এবং মিয়ানমারের ম্রো জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁদের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে।
আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর্জা জহির উদ্দিন বলেন, মাইন বিস্ফোরণে একজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তি মিয়ানমারের এবং আহত ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক বলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন। তবে সীমান্ত এলাকা দুর্গম হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছানো কঠিন।