
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের আসার খবরে ঢেকে ফেলা হয়েছিল কিশোরগঞ্জের ভৈরব জংশন স্টেশন সড়কের পাশে থাকা আবর্জনার স্তূপ। কথা ছিল, তিনি চলে যাওয়ার পর কাপড় আর সরানো হবে না। তবে উপদেষ্টা চলে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কাপড় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে আবার দৃশ্যমান হয়েছে আবর্জনার স্তূপ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সড়কটির একপাশের পুকুরে কয়েক বছর ধরে আবর্জনা ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এ থেকে সৃষ্ট দুর্গন্ধে প্রতিদিনই ভোগান্তি পোহান পথচারীরা। এতে শহরের ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আন্দোলন ও মানববন্ধন করেও সমাধান পাননি। তবে গতকাল বুধবার উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের আগমন উপলক্ষে পৌর কর্তৃপক্ষ রঙিন কাপড়ে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশ থেকে কাপড় সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে এটি আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। স্থানীয় কয়েকজন জানান, গতকাল সূর্য ডোবার পরপরই কাপড় খুলে নেওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইস্যুটি সামনে এনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই। রক্তদাতাদের স্থানীয় সংগঠন ‘রক্ত সৈনিক’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের গুরুত্বপূর্ণ লোকেদের কাছে আমরা এভাবেই প্রকৃত চিত্র আড়াল করি। আর এ কারণেই সরকার মনে করে যে দেশ ভালোই চলছে। ফলে জনগণের দুর্ভোগ আর কমে না।’
আবর্জনার স্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে কথা হয় রিকশাচালক আজগর আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কাপড় নিয়া গেছে, ভালো হইছে। কাপড় দিয়া তো আর গন্ধ আটকাইতে পারতেছিল না। গন্ধই যদি না আটকাইতে পারে, তাইলে কাপড় থাকলেই কী, আর না থাকলেই কী?’
আজগরের কথা শেষ হতে না হতেই রুস্তম মিয়া নামের ভৈরব বাজারের মুদিদোকানি নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘তাঁদের (প্রশাসন) কাছে উপদেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, চাকরি থাকা কিংবা না থাকা বড় কর্মকর্তাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তাই চাকরি বাঁচাতে ঢাকছিল। চাকরি হারানোর ভয় শেষ, কাপড়ও সইরা গেছে।’
এসব বিষয়ে ভৈরব পৌরসভার কনজারভেন্সি ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে বেড়া দিয়ে আবর্জনা ঢেকে দেব। সে জন্যই কাপড় সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’ দুর্গন্ধের কী হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বিব্রত হন। পরে বলেন, ‘আগে আবর্জনা ঢাকি, পরে দুর্গন্ধের বিষয়ে কিছু করা যাবে।’