পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেডের বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন লেগে পুরোনো মালপত্র পুড়ে গেছে। আজ সোমবার সকালে
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেডের বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন লেগে পুরোনো মালপত্র পুড়ে গেছে। আজ সোমবার সকালে

কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘স্ক্র্যাপ শেডে’ আগুনের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেডের (আরএনপিএল) ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘স্ক্র্যাপ শেডে’ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামে নির্মাণাধীন ওই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় এ আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে কলাপাড়া থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। পাশাপাশি আরএনপিএলের নিজস্ব ফায়ার ইউনিটের সহায়তায় রাত সাড়ে ৯টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে মূল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোনো ক্ষতি হয়নি।

পরে গতকাল রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরএনপিএল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল হালিমকে তদন্ত দলের প্রধান করা হয়েছে। অন্য দুই সদস্য হলেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ওসমান ও উপব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আমিনুল ইসলাম। কমিটিকে আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

আরএনপিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম ভূঁইয়া ও প্রকল্প পরিচালক (পিডি) তৌফিক ইসলাম আজ সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

মূল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দক্ষিণ পাশে প্রায় ২০ একর জায়গাজুড়ে ‘স্ক্র্যাপ শেডে’র অবস্থান। সেখানে প্লাস্টিকের ড্রাম, প্লাস্টিকের খালি বোতল, বিটুমিনের খালি ড্রাম, বিভিন্ন যন্ত্রাংশের টুকরা, বিদেশ থেকে আসা বিভিন্ন পণ্যের লোহার পাতের প্যাকেজিং আগুনে পুড়ে গেছে। আজ সকালে গিয়ে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া মালামালের স্তূপ থেকে আগুনের ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের কনিষ্ঠ নির্বাহী মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আসলে তত বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এতে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো নিরূপণ হয়নি। গতকাল আগুন লাগার পর থেকেই আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং পরে পরিস্থিতি দেখভাল করতে প্ল্যান্টের লোকজন রাতভর কাজ করেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই উদ্ধারকাজ শুরু করা হবে।’
কীভাবে আগুন লেগেছে, তা কেউই স্পষ্ট করে বলতে পারেননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়দের কয়েকজন বলেন, যেসব পুরোনো বা ফেলনা জিনিসপত্র পুড়েছে, তা বিক্রি করা হয়ে থাকে। এসব মালামাল বিক্রি থেকেও অনেক টাকা আয় হয়। এটা কোনো নিছক অগ্নিকাণ্ড নয়, এর সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রের লোকজন জড়িত থাকতে পারেন।’

আরএনপিএলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্ক্র্যাপ ইয়ার্ডে কীভাবে আগুন লেগেছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এতে মূল পাওয়ার প্ল্যান্টের কোনো ক্ষতি হয়নি। বিষয়টি নাশকতার উদ্দেশে কি না, তা–ও এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, আসলে স্থানীয় একটি চক্র প্ল্যান্টের ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন সময় এসব পরিত্যক্ত মালামাল চুরি করে নেওয়ার চেষ্টা করে। বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের লোকদের বাধার কারণে নিতে পারেননি। এখন ওই চক্রের লোকেরাই এসব কথা বলে বেড়াচ্ছেন। নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছেন।