সিলেটে আটক হওয়া ‘শুটার রিয়াজ’ এখন পুলিশের হেফাজতে আছে। তাঁকে সিলেট থেকে নারায়ণগঞ্জে নেওয়া হয়েছে
সিলেটে আটক হওয়া ‘শুটার রিয়াজ’ এখন পুলিশের হেফাজতে আছে। তাঁকে সিলেট থেকে নারায়ণগঞ্জে নেওয়া হয়েছে

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য

বিপদ দেখে নিজের সন্তানদের ফেলে পালাতে চেয়েছিলেন ‘শুটার রিয়াজ’

সিলেটের গোয়াইনঘাটে শিশু অপহরণকারী সন্দেহে জনতার হাতে আটক রিয়াজ বাহিনীর প্রধান রিয়াজুল ইসলাম ওরফে ‘শুটার রিয়াজ’ বিপদ দেখে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। নিজের দুই যমজ সন্তানকে এ সময় ফেলে রেখে চলে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে গ্রামবাসীর সন্দেহ হলে তাঁকে আটকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

গতকাল বুধবার বিকেল চারটার দিকে গোয়াইনঘাটের আলীর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা আজ বৃহস্পতিবার এমন তথ্যই জানিয়েছেন।

পুলিশ বলছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ ও তার আশপাশের এলাকায় রিয়াজুলের নেতৃত্বে তাঁর সহযোগীরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালান। জমি দখল, অবৈধভাবে বালু ভরাট, মাটিকাটার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ আছে তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে।

গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রিয়াজুল সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থান করছেন—এমন খবরে র‍্যাব তাঁর সন্ধান করছিল। একটি প্রাইভেট কারে করে রিয়াজুল তাঁর স্ত্রী ও দুই যমজ মেয়েকে নিয়ে জাফলংয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বিকেলে তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে গোয়াইনঘাটের আলীর গ্রামের দিকে যান।

এ সময় তাঁর পেছনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে বুঝতে পেরে রিয়াজুল গ্রামের এক বাড়ির বারান্দায় দুই সন্তানকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হলে তাঁকে ধাওয়া দিয়ে আটক করেন। তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রিয়াজুল ইসলাম ও দুই সন্তানকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেয়।

রিয়াজুলের ব্যবহৃত গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ রিয়াজুলকে ‍‘শুটার রিয়াজ’ হিসেবে শনাক্ত করে। এর আগেও একাধিকবার তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ধরা পড়েছিলেন। জামিনে বেরে হয়ে আবারও অপরাধজগতের সঙ্গে জড়িয়ে যেতেন, এমনটাই দাবি পুলিশের। সর্বশেষ ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁয়ে অভিযান চালিয়ে চার সহযোগীসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল র‍্যাব।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শুটার রিয়াজ ওরফে রিয়াজুলের নামে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ও মাদক আইন, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২২টি মামলা আছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার পুলিশ আজ বৃহস্পতিবার সকালে গোয়াইনঘাট থানায় পৌঁছালে রিয়াজুলকে তাঁদের হাতে হস্তান্তর করা হয়। ওই থানায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। তিনি মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তাঁর গাড়ি ও দুই মেয়েকে স্ত্রীর কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।