
টেকনাফের বাজারে এখন মিলছে লাল ও হলুদ দুই জাতের তরমুজ। মৌসুমের অনেক আগে আসা এই তরমুজ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে অসময়ে বাজারে ওঠায় দাম বেশি হওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষ কিনতে পারছেন না। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, টেকনাফে গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন উভয় মৌসুমেই তরমুজ চাষ করা হয়, আর এবারের মৌসুমে প্রথমবারের মতো হলুদ তরমুজ বাজারে এসেছে। স্থানীয় কৃষকেরা বাড়তি আয়ের আশায় চাষে ঝুঁকছেন।
সারি সারি ফলের দোকান। সামনে স্তূপ করে সাজানো রয়েছে তরমুজ। হালকা সবুজের ওপর গাঢ় সবুজ ডোরাকাটা মাঝারি আকারের লম্বাটে তরমুজ। স্তূপের কয়েকটি তরমুজ কেটে পলিথিন মুড়িয়ে রাখা হয়েছে। কোনোটি টকটকে লাল আবার কোনোটি হলুদ। দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতের পর বসন্তের দিকে তরমুজ বাজারে আসে। বলা যায়, এপ্রিল, মে মাসই তরমুজের ভরা মৌসুম। কিন্তু এবার ভাদ্র মাস অর্থাৎ শরতেই বাজারের দোকানে দোকানে দেখা মিলছে তরমুজের স্তূপের। অসময়ের এসব তরমুজ দেখতেই চারপাশে কৌতূহলী ক্রেতাদের ভিড়। অনেকে লাল তরমুজের পাশাপাশি হলুদ তরমুজ দেখেও অবাক হচ্ছেন। কেউ জানতে চাইছেন, হলুদ তরমুজের স্বাদ কেমন। আবার কারও প্রশ্ন, এই অসময়ে লাল, হলুদ তরমুজ কীভাবে এল?
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাসস্টেশন বাজারে এলে এমন দৃশ্য চোখে পড়বে। আগাম জাতের নানা ফলের জন্য টেকনাফের সুনাম রয়েছে। এবার সেই ধারাবাহিকতায় যোগ হলো তরমুজ। অসময়ে এই ফলের চাহিদাও অনেক। উপজেলার শাপলা চত্বর জিরো পয়েন্ট, অলিয়াবাদ স্কুলমাঠ, থানা মোড়, ওপরের বাজার, লামার বাজার, উপজেলা পরিষদসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় তরমুজ নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
টেকনাফে শুধু তরমুজ নয়। এর বাইরেও বিভিন্ন জাতের আগাম ফল পাওয়া যায়। চাহিদা বেশি থাকায় তরমুজের চাষ বাড়ছে। তবে এবারেরই প্রথম হলুদ রঙের তরমুজ টেকনাফের বাজারে এসেছে। উপজেলার সেন্ট মার্টিন, বাহারছড়া, সাবরাং, টেকনাফ সদর, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং এলাকায় তরমুজের চাষ বেশি। বাড়তি আয়ের কথা চিন্তা করে কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকেরা তরমুজ চাষাবাদ করছেন।মো. শফিউল আলম কুতুবী, উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা
আকারভেদে এসব তরমুজ বিক্রি হচ্ছে কেজি হিসাবে। প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। সেই হিসাবে একটি মাঝারি আকারের তরমুজের দাম পড়ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। ভেতরে লাল রং রয়েছে এমন প্রতি তরমুজের ওজন ৩ থেকে ৭ কেজি। তবে ভেতরে হলুদ রং রয়েছে এমন তরমুজের ওজন ২ থেকে ৪ কেজি।
বিক্রেতারা বলছেন, অসময়ের এই তরমুজ খেতে দারুণ সুস্বাদু। লাল ও হলুদ উভয় জাতের তরমুজই খেতে মিষ্টি। তবে আকারে হলুদ তরমুজ কিছুটা ছোট হয়।
কৃষি বিভাগ জানায়, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস তরমুজ চাষের সময়। দেশে ভালো ফলনের জন্য ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের প্রথম দিক পর্যন্ত এ ফল চাষ করা হয়। তবে টেকনাফে জুন থেকে জুলাইয়ে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করা হয়। এ তরমুজ আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে উত্তোলন করা হয়। আবার অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে শীতকালীন তরমুজের বীজ বপন করা হয়। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এসব তরমুজের চাষ করা হয়। গত বছর উপজেলায় ১১৩ একর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে তরমুজ চাষ আরও বাড়তে পারে। মূলত গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এসব তরমুজের চাহিদা বাড়ে।
কৃষি বিভাগ জানায়, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস তরমুজ চাষের সময়। দেশে ভালো ফলনের জন্য ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের প্রথম দিক পর্যন্ত এ ফল চাষ করা হয়। তবে টেকনাফে জুন থেকে জুলাইয়ে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করা হয়। এ তরমুজ আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে উত্তোলন করা হয়। আবার অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে শীতকালীন তরমুজের বীজ বপন করা হয়। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এসব তরমুজের চাষ করা হয়। গত বছর উপজেলায় ১১৩ একর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে তরমুজ চাষ আরও বাড়তে পারে। মূলত গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এসব তরমুজের চাহিদা বাড়ে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অসময়ে বাজারে আসায় দাম তুলনামূলক বেশি। এ কারণে ক্রেতাদের আগ্রহ থাকলেও কিনছেন কম। তবে গরম বাড়লে এ ফলের বিক্রি বাড়ে। বাসস্টেশন এলাকার ফল বিক্রেতা বাদশা মিয়া প্রথম আলোকে বলেন,সামনে হয়তো দাম কমতে পারে। তখন বিক্রি বাড়বে বলে তাঁর আশা। পাশে আরেক ফলবিক্রেতা আবদুল আমিন বলেন, অসময়ের তরমুজ হলেও এখন স্বাদ বেশি। এ কারণে ক্রেতারা বারবার আসছেন।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম কুতুবী বলেন, ‘টেকনাফে শুধু তরমুজ নয়, এর বাইরেও বিভিন্ন জাতের আগাম ফল পাওয়া যায়। চাহিদা বেশি থাকায় তরমুজের চাষ বাড়ছে। তবে এবারই প্রথম হলুদ রঙের তরমুজ টেকনাফের বাজারে এসেছে। উপজেলার সেন্ট মার্টিন, বাহারছড়া, সাবরাং, টেকনাফ সদর, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং এলাকায় তরমুজের চাষ বেশি। বাড়তি আয়ের কথা চিন্তা করে কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকেরা তরমুজ চাষাবাদ করছেন।’