জাল ও নৌকা নিয়ে পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন জেলে খলিল মণ্ডল; কিন্তু এত বড় মাছ পাবেন তা ভাবতে পারেননি। জাল তুলে দেখেন, বিশাল আকারের একটি কাতলা মাছ। মাছটি বিক্রি হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকায়।
সাড়ে ২৭ কেজি ওজনের কাতলাটি শনিবার সকালে পদ্মা নদীর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার কুশাহাটা এলাকায় খলিল মণ্ডল জালে আটকা পড়ে। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী মাছটি ৪৫ হাজার টাকায় কিনে ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকায় বিক্রি করেন।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানান, প্রতিদিনের মতো শনিবার সকালে পদ্মা নদীতে জাল ও নৌকা নিয়ে মাছ শিকারে বের হন পাবনা অঞ্চলের জেলে খলিল মণ্ডল। তিনি কুশাহাটা এলাকায় জাল ফেলেন। সকাল ১০টার দিকে জাল টেনে নৌকায় তুলতেই দেখতে পান বড় আকারের একটি কাতলা মাছ। জালে বড় কাতলা মাছ পাওয়ার খবর ঘাট এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় অনেকের সঙ্গে ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ জেলেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে থাকেন।
এ সময় দর–কষাকষি করে মাছটি ১ হাজার ৬৫০ টাকা কেজি দরে শাহজাহান শেখ কিনে নেন। পরে মাছটি শাহজাহান শেখের ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শাকিল-সোহান মৎস্য ভান্ডারের আড়তে জেলেরা পৌছে দেন। এ সময় এখানে মেপে দেখা যায়, মাছটির ওজন প্রায় সাড়ে ২৭ কেজি। সেই হিসাবে এটির দাম হয় ৪৫ হাজার ৩৭৫ টাকা। পরে বেলা দুইটার দিকে কুড়িগ্রাম এলাকার এক পরিচিত বড় ব্যবসায়ীর কাছে ৪৯ হাজার ৫০০ টাকায় তিনি মাছটি বিক্রি করেন।
এ বিষয়ে শাকিল-সোহান মৎস্য ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মো. শাহজাহান শেখ বলেন, ‘সকালে জেলেদের জালে বিশাল আকারের একটি কাতলা মাছ পাওয়ার খবর পেয়ে তিনি জেলে খলিলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে সেটি কিনে নেন। দুপুরের পরপরই মাছটি কুড়িগ্রামের পরিচিত এক বড় ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করা হয়। একটি কাতলা মাছের দাম অর্ধলক্ষ টাকা হওয়ায় তিনি নিজেও অবাক হন। তবে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর এই মৌসুমে এত বড় কাতলা মাছ ধরা পড়ল। বড় মাছ পেয়ে জেলেদের সঙ্গে তিনি নিজেও খুব খুশি।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার জামান বলেন, পদ্মায় বড় আকারের কাতলা মাছ ধরা পড়ার খবর তিনি নিজেও পেয়েছেন। নদীতে বর্তমানে ধীরে ধীরে পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলেদের জালে বড় আকারের বোয়াল, পাঙাশ, কাতলা, বাগাড়, চিতলসহ নানা প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে। বড় মাছ পেয়ে জেলেরা অনেক খুশি। তবে বড় মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলা গেলে নদীতে মাছের বংশবিস্তার আরও দ্রুত ঘটবে বলে তিনি মনে করেন।