
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম ওরফে রাজুকে গ্রেপ্তারের পর হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় শিবগঞ্জ থানা–পুলিশের উপপরিদর্শককে (এসআই) প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁর নাম আবদুল্লাহ আল মামুন। তাঁকে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আসাদুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন শিবগঞ্জ-সোনাতলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম।
আজ সোমবার বগুড়ার পুলিশ সুপার জিদান আল মুসা স্বাক্ষরিত পৃথক আদেশ থেকে এসব তথ্য জানা যায়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বগুড়ার পুলিশ সুপার জিদান আল মুসা প্রথম আলোকে বলেন, আসামি ধরতে গিয়ে হাতকড়া পরানোর পর সেই আসামিকে থানা পর্যন্ত আনতে না পারার ব্যর্থতার ঘটনা প্রাথমিক তদন্তে শিবগঞ্জ থানার এসআই আবদুল্লাহ আল মামুনের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতি ছিল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে তাঁকে শিবগঞ্জ থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনা তদন্তে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আসাদুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন শিবগঞ্জ-সোনাতলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম।
গত শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার চক ভোলাখাঁ গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে সাদাপোশাকে শিবগঞ্জ থানা–পুলিশের এসআই আবদুল্লাহ আল মামুন একজন কনস্টেবল সঙ্গে নিয়ে অভিযানে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রেজ্জাকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেন। পরে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে রেজ্জাকুলকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করে রোববার মামলা করা হয়। এ মামলায় পুলিশ ইতিমধ্যে চক ভোলা খাঁ মহল্লায় অভিযান চালিয়ে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ১১ জনই গৃহবধূ। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে পুলিশের ভয়ে চক ভোলা খাঁ মহল্লা এখন প্রায় জনশূন্য। মহল্লার নারীরাও এখন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।