গ্রামবাসীর শ্রমে–অর্থে ভাঙা সাঁকো মেরামত করে তৈরি হয়েছে কাঠের সেতু। গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার বংশিঘাটায়
গ্রামবাসীর শ্রমে–অর্থে ভাঙা সাঁকো মেরামত করে তৈরি হয়েছে কাঠের সেতু। গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার বংশিঘাটায়

ভাঙা সাঁকো মেরামত করে নিজেরাই গড়লেন কাঠের সেতু

গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি সাঁকো ভেঙে প্রায় ৪ মাস ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন হাজারো মানুষ। অবশেষে নিজেরাই চাঁদা তুলে ও স্বেচ্ছাশ্রমে সেটি সংস্কার করে কাঠের সেতু নির্মাণ করেছেন গ্রামবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এটি গাজীপুরের শ্রীপুরের শিল্পাঞ্চল খ্যাত শ্রীপুর পৌরসভার বংশিঘাটায় অবস্থিত। সবাই সেতু এলাকাটিকে বংশিঘাটা নামে চেনেন। এই সেতু পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডকে যুক্ত করেছে। পঞ্চাশ ফুট দৈর্ঘ্যের ১০ বছরের পুরোনো সাঁকোটিকে সংস্কার শুরু হয় গত শুক্রবার। গ্রামের ৫০-৬০ জন মিলে দুই দিন ধরে শ্রম ও অর্থ দিয়ে শনিবার রাতে কাঠের সেতু নির্মাণ শেষ করেছেন।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাঁকোর দুই পাশে ৫টি শিল্পকারখানা আছে। দৈনিক অন্তত হাজারখানেক শ্রমিক ও সাধারণ লোকজন এটি ব্যবহার করেন। হঠাৎ দুই মাস আগে বাঁশ দিয়ে তৈরি সাঁকোটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ ভেঙে যায়। এতে চলাচলে ঝুঁকি ও দুর্ভোগ দেখা দেয়। এত দিন ধরে দুর্ভোগ হলেও গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তা সংস্কারে কেউ এগিয়ে আসেনি। এরপর স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী কাইয়ুম সরকার বলেন, এত এত মানুষকে পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি মাড়িয়ে কাজে যেতে হচ্ছিল। তাই তাঁরা নিজেরাই এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন। তিনি তাঁর কাঠ চেরাই কলের বিপুল পরিমাণ কাঠ সংস্কারকাজে দিয়েছেন।

মো. শফিকুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক বলেন, কারখানায় যেতে, লাঞ্চ বিরতিতে বাসায় ফিরতে ও ছুটির পর ওই এলাকায় শ্রমিকেরা চরম দুর্ভোগে ছিলেন। সংস্কার করে সেখানে কাঠের সেতু তৈরি করায় দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে।

স্থানীয় পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলম বলেন, শনিবার রাতে সেখানে কাঠের সেতু নির্মাণ শেষ হয়েছে। রোববার সকাল থেকে শ্রমিক ও গ্রামবাসী সেটি ব্যবহার করছেন। মানুষের ঐক্য আর মহানুভবতার কাছে কোনো সমস্যাই বড় নয়। তবে এখানে জনদুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের এগিয়ে আসা উচিত ছিল।

শ্রীপুর পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী শাহেদ আক্তার বলেন, গ্রামবাসীর উদ্যোগে কাঠের সেতু নির্মাণের বিষয়ে তাঁর জানা নেই। তবে বংশিঘাটায় স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ব্যয়বহুল সেতু হওয়ার কারণে সেখানে পৌর কর্তৃপক্ষ অর্থায়ন করতে পারবে না। মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।