শেখ নূর উদ্দিন
শেখ নূর উদ্দিন

রাকসুর ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী

শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর হতে চাই 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শেখ নূর উদ্দিন। ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচন ও ছাত্রদল ঘোষিত প্যানেল নিয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শফিকুল ইসলামসাজিদ হোসেন

প্রশ্ন

আপনারা নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, সেই সংশয় ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবার আগে আপনারাই প্যানেল ঘোষণা করলেন।

শেখ নূর উদ্দিন: আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে লড়াই করেছি একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য। রাকসুতে ছাত্রদল সবার আগে প্যানেল দেবে, এটাই তো স্বাভাবিক। কারণ, এই রাকসুর জন্য আমরা কাজ করছি সেই ফ্যাসিবাদী আমল থেকে।

প্রশ্ন

প্যানেল দিতে কোন বিষয়গুলো বিবেচনায় ছিল?

শেখ নূর উদ্দিন: আমাদের প্যানেলে চারজন নারী আছেন। একজন এজিএস পদে লড়বেন। ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়। অন্যদের তুলনায় আমরা নারীদের প্রাধান্য দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল দলের গোলরক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক, অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈচিত্র্যময় প্যানেল করেছি আমরা। আমরা চাই শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর হয়ে কাজ করতে।

প্রশ্ন

ছাত্রদল ডাকসুতে ভোট প্রত্যাখ্যান আর জাকসুতে বর্জন করেছে। এমন বাস্তবতায় রাকসুতে কী হবে শেষ পর্যন্ত?

শেখ নূর উদ্দিন: ডাকসু বা জাকসুতে কী হয়েছে, সে ব্যাপারে কথা বলতে চাচ্ছি না। আশা করছি, এখানে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয় ও প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তাহলে শিক্ষার্থীদের রায় আমরা মাথা পেতে মেনে নেব।

প্রশ্ন

আপনাদের শক্তির জায়গা কী বলে মনে করেন? শিক্ষার্থীরা কেন আপনাদের ভোট দেবেন?

শেখ নূর উদ্দিন: আমাদের প্যানেলটা বৈচিত্র্যময়। এখানে সব ধরনের শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাঁরা বিশেষ ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারবেন এবং রাখছেনও। এটা শিক্ষার্থীরাও জানেন। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থেকে, তাঁদের দাবি আদায়ে কাজ করি। তাঁরা ছাত্রদলকে ভালোবাসেন। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসাই আমাদের শক্তি।

প্রশ্ন

আপনারা নির্বাচিত হলে কী করবেন?

শেখ নূর উদ্দিন: শিক্ষার পরিবেশ, শিক্ষকদের নিরপেক্ষতা, একাডেমিক ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন, গ্রন্থাগার সংস্কার ও পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাকেন্দ্র নিয়ে কাজ করব। শিক্ষার্থীদের বাসস্থান, খাদ্যসহ যত মৌলিক চাহিদা আছে, সেগুলোও প্রাধান্য পাবে। নারীদের সাইবার বুলিং রোধে কাজ করে যাব।

প্রশ্ন

অনেকেই ইঙ্গিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রদলের প্রতি পক্ষপাত করেছে বলেই নির্বাচন পেছানো হয়েছে। এ বিষয়ে কী বলবেন?

শেখ নূর উদ্দিন: আমরা যেসব দাবিদাওয়া জানিয়েছে, সেগুলো আন্দোলনের মাধ্যমেই আদায় করে নিয়েছি। যদি এমন কিছু থাকতই, তাহলে আমাদের আন্দোলন করতে হতো না। প্রশাসন দাবিগুলো এমনিতেই মেনে নিত।

প্রশ্ন

ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল মিঠু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভিপি পদে লড়ছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকলে কী হবে?

শেখ নূর উদ্দিন: ছাত্রদল সবসময় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। গণতান্ত্রিক উপায়ে সবার প্রার্থী হওয়ার অধিকার আছে। সে হিসেবে যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। তবে তিনি এখনো ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। আশা করি, তিনি দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন।

প্রশ্ন

’৭১ ও ’২৪ নিয়ে যে আলাপ হয়, তা নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?

শেখ নূর উদ্দিন: আমি এক বাক্যে বলবো, ’৭১ আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের বছর। আর ’২৪ আমাদের স্বাধীনতা রক্ষার বছর। এটা আলাদা করার কিছু নেই। 

প্রশ্ন

১৪ সেপ্টেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হচ্ছে। গতানুগতিক প্রচারের বাইরে অন্য কোনো কৌশল থাকবে কি না।

শেখ নূর উদ্দিন: শিক্ষার্থীদের কাছে সরাসরি যেতে চাই। অন্য একটি রাজনৈতিক প্যানেলের মতো আমরা বিশেষ ‘উপঢৌকন’ দেব না। 

প্রশ্ন

জয়ের ব্যাপারে আপনারা কতটা আশাবাদী?

শেখ নূর উদ্দিন: বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকায় আমরা অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। বিষয়টি শিক্ষার্থীরাও জানেন। তাঁরা আমাদের ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করছেন। তাঁদের নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি, তাঁরা আমাদেরকেই বেছে নেবেন।