
মাদারীপুর-১ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে শিবচর উপজেলা। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁর সমর্থকেরা শিবচরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা জানান, অবিলম্বে কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না করা হলে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন শিবচর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক শাজাহান মোল্লা, পৌর বিএনপির সদস্যসচিব আজমল হোসেন সেলিম খান, উপজেলা ছাত্রদল, যুবদল নেতারাসহ দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা।
গত সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন কামাল জামান মোল্লা। তবে মাদারীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও মাদারীপুর-১ আসন থেকে মনোনয়ন না পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকীর সমর্থকেরা ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চরে টায়ার জ্বালিয়ে মনোনয়নের বিরোধিতা করে দুই ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব আজমল হোসেন বলেন, ‘কামাল জামানের মনোনয়ন বহাল রাখার দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছি। শিবচরে তিনিই একমাত্র বিএনপির প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তাঁর পরিবর্তে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তা আমরা কখনোই মানব না। কঠিন থেকে কঠিনতম আন্দোলনে যাব। প্রয়োজনে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে অবরোধ করে অচল করে দেব।’
মনোনয়ন স্থগিত প্রসঙ্গে কামাল জামান মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিবচরের ৮০ ভাগ মানুষ আমাকে পছন্দ করেন। আওয়ামী লীগের একটি চক্র (কিছু সদস্য) আছেন, যাঁরা বিএনপি করেও আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি লিটন চৌধুরীর টাকায় চলেছেন। তাঁরাই আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এক্সপ্রেসওয়েতে অবরোধ করে বিরোধিতা করেছেন। আজ যাঁরা আমার পক্ষে রাজপথে দাঁড়িয়ে মনোনয়ন স্থগিতের প্রতিবাদ জানিয়েছেন, তাঁদের বিষয় আমার আগে থেকে কিছু জানা নেই। আমার নির্দেশনায় কিছু হচ্ছে না। জনগণ ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা আমাকে বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।’
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত শারদীয় দুর্গাপূজার এক অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কামাল জামান মোল্লা। বক্তব্যের শেষে তিনি ‘জয় বাংলা’ বলার একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও ভিডিও ফুটেজটি তাঁর বিএনপিতে মনোনয়ন পাওয়ার পরই ভাইরাল হয়েছে, তবে ভিডিওটির স্থান ও সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে কামাল জামান মোল্লা আরও বলেন, ‘আমি জীবনেও আওয়ামী লীগ করি নাই। বিগত ১৭ বছর আন্দোলনে রাজপথে থেকে বিএনপি করে কেন জয় বাংলা বলতে যাব? ওই ভিডিওটা এডিট করে একটি কুচক্রী মহল প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। আমাকে হেয় করতে এটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।’