নিম্নচাপের কারণে উত্তাল সাগর। আজ বিকেলে কক্সবাজার উপকূলে
নিম্নচাপের কারণে উত্তাল সাগর। আজ বিকেলে কক্সবাজার উপকূলে

সাগর উত্তাল, চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ

চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চাকরি শেষ করে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘরে ফেরেন। চুলা জ্বালাতে গিয়ে দেখেন গ্যাস নেই। রাত ১০টায় তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, গ্যাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ গ্যাস চলে যাওয়ায় বিপদে পড়েছেন। রান্না হয়নি।

শুধু জামালখান নয়, নগরের অনেক এলাকায় রাত ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও গ্যাস ছিল না। মূলত নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল হয়ে কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনালে কারিগরি ত্রুটির ফলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ ছিল। সামিট এলএনজি টার্মিনালে ওই ত্রুটি হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। রাত ৮টায় গ্যাস সরবরাহ শুরু হলেও এখনো অনেক এলাকায় চুলা জ্বলছে না। সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতেও গ্যাসের চাপ কমে গেছে।

গ্রাহক ও কেজিডিসিএল সূত্র জানায়, নগরের লালখান বাজার, জামালখান, হালিশহর, চেরাগীপাহাড়, আন্দরকিল্লা এলাকায় এখনো গ্যাস নেই। এ ছাড়া নগরের অন্যান্য এলাকায় চাপ একেবারে কম।

গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমেটেডের মহাব্যবস্থাপক মো.শফিউল আজম খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সামিট এলএনজি টার্মিনালে কারিগরি ত্রুটি হয়েছিল। এ কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল। রাত আটটায় সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। তবে চাপ কম। এ কারণে অনেক এলাকায় গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। রাত ১২টার মধ্যে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। অন্যটি সামিট এলএনজি টার্মিনাল। এই দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে দিনে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হয়। টার্মিনাল থেকে গ্যাস বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল)।

গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার বিষয়ে কোম্পাানির উপমহাব্যবস্থাপক শফিউদ্দিন মো. ফরহাদ ওমর প্রথম আলোকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলের সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। স্বাভাবিকের তুলনায় ৪-৫ ফুট উচ্চতার ঢেউ টার্মিনালে আছড়ে পড়ছে। এ কারণে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। পরিস্থিতি খারাপ হলে যেকোনো সময় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হতে পারে।

শফিউদ্দিন মো. ফরহাদ ওমর বলেন, সন্ধ্যায় সামিট এলএনজি টার্মিনালে হঠাৎ কারিগরি ত্রুটি ধরা পড়ে। এ কারণে সরবরাহ একেবারে শূন্য হয়ে যায়। পরে রাত আটটার দিকে ত্রুটি সারিয়ে সরবারহ শুরু হয়। তবে পরিমাণে কম হলেও ধীরে ধীরে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয় জানিয়েছে, আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে। আগামীকাল ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।