১১ বছর পর সম্মেলন

খালিয়াজুরি উপজেলা বিএনপির সভাপতি রউফ, সম্পাদক মাহবুবর

সভাপতি আবদুর রউফ (বাঁয়ে) ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ১১ বছর পর নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে খালিয়াজুরি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে আবদুর রউফকে সভাপতি ও মাহবুবর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। আবদুর রউফ আগের কমিটির আহ্বায়ক ও মাহবুবর রহমান যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৪ সালে খালিয়াজুরি উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছিল। এরপর ১১ বছর কোনো সম্মেলন করতে পারেনি দলটি। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সক্রিয় হন বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আজ খালিয়াজুরি কলেজ মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

দুপুর ১২টার দিকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আনোয়ারুল হক। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম। বিশেষ বক্তা ছিলেন জেলার সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম হিলালী।

প্রথম অধিবেশনে উপজেলা কমিটির সাবেক আহ্বায়ক আবদুর রউফের সভাপতিত্বে ও সাবেক আহ্বায়ক মাসুদ রানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধক, প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি ছাড়াও ময়মনসিংহ বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ্ ওয়ারেছ আলী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নেত্রকোনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান তালুকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের তালুকদার, বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বজলুর রহমান পাঠান, এস এম মনিরুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বিকেলে দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে আবদুর রউফ ও আবুল কালাম আজাদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুবুর রহমানসহ ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ছয়টি ইউনিয়নের ৪৩১ ভোটারের মধ্যে ৪৩০ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে ৩১৭ ভোট পেয়ে আবদুর রউফ সভাপতি নির্বাচিত হন। আর ৯৮ ভোট পেয়ে মাহবুবর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নাজমুল হক পেয়েছেন ৯৭ ভোট। সন্ধ্যার পর ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

ভোটার শামছুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করেছি। ভোটাররা সৎ, আদর্শবান ও ত্যাগী নেতাদেরই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করেছেন, যাঁরা তৃণমূলের সাধারণ নেতা-কর্মীদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকেন।’

বিজয়ী সভাপতি আবদুর রউফ বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর হলেও আমরা স্বাধীনভাবে দলের সম্মেলন করতে পেরেছি। আশা করি, নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে দল আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী হবে।’

সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিগত সরকারের লোকজন আমাদের ওপর মামলা-হামলা করে নানা অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তাদের অত্যাচারে অসংখ্য মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আমাদের পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। তবুও আমি দলের নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলাম। তাঁরা আমাকে মূল্যায়ন করেছেন, সে জন্য কৃতজ্ঞ।’