Thank you for trying Sticky AMP!!

ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে পদ্মা নদীতে ভেসে যাওয়া বাবার লাশ উদ্ধার

ভেসে যাওয়ার ১৯ ঘণ্টা পর পদ্মা নদী থেকে শাহাদাত খানের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে

ফরিদপুরে চরভদ্রাসন ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে পদ্মা নদীতে ভেসে যাওয়া বাবার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার ১৯ ঘণ্টা পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভেসে যাওয়ার জায়গা থেকে অন্তত ৫০০ মিটার দূরে পদ্মা নদীর একটি ডুবোচর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেন চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম শাহাদাত খান (৫৩)। তিনি চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের বাদুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা কুটি খানের ছেলে। শাহাদাতের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।

Also Read: ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে পদ্মা নদীর স্রোতে ভেসে গেলেন বাবা

পরিবারের সদস্য, প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, শাহাদাত খান পেশায় একজন পোশাক ব্যবসায়ী। তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় বসবাস করতেন। গ্রামের বাড়িতে ঈদ করবেন বলে শাহাদাত তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের গত সোমবার গ্রামের বাড়ি চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের বাদুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গীতে পাঠিয়ে দেন। গতকাল বুধবার সকালে তিনি ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন। এরপর বিকেল শাহাদাত তাঁর ছোট ছেলে হাফিজুর রহমান ওরফে সিয়াম (১৬) ও ভাতিজা তানভীর খানকে নিয়ে গোপালপুর ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে যান। একপর্যায়ে সিয়াম স্রোতের টানে ভেসে গেলে বাবা শাহাদাত খান তাকে উদ্ধার করতে নদীতে নামেন। তিনি ছেলেকে উদ্ধার করে জেলেদের একটি নৌকার উঠিয়ে দিলেও নিজে স্রোতের টানে ভেসে যান। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের গোপালপুর ঘাট থেকে আনুমানিক ৭০০ মিটার দূরে পদ্মা নদীর ড্রেজিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

শাহাদাত খান ছেলেকে উদ্ধার করে জেলেদের একটি নৌকার উঠিয়ে দিলেও নিজে স্রোতের টানে ভেসে যান।

চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মুর্তজা ফকির প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা নদীতে নিখোঁজ শাহাদাতকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা তাঁরা বুধবার বিকেলই শুরু করেন। পরে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের দুই ডুবুরি তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। তবে বুধবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ সকাল থেকে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহাদাতের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ফরিদপুর সিঅ্যান্ডবি ঘাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইদ্রিস আলী বলেন, পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শাহাদাত খান মরদেহটি ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

চরভদ্রাসন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। শাহাদাত ঢাকায় ব্যবসা করতেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকাতেই থাকতেন। ঈদের ছুটিতে ঈদের আনন্দ করতে বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু আজ ঈদের দিন তাঁর লাশ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় ওই পরিবারসহ সমগ্র বাদুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কোন ভাষায় ওই পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেব, তা ভেবে পাচ্ছি না।’