চাঁদপুর শহরের প্রফেসরপাড়া মোল্লাবাড়ী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আ ন ম নুর রহমানকে (৬৮) কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে ভুক্তভোগীর ছেলে আফনান তাকি বাদী হয়ে অভিযুক্ত মো. বিল্লাল হোসেনের (৫০) নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন।
মামলায় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২ এবং ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩২৪, ৩২৬, ৩০৭ ও ৩৪ ধারায় পরিকল্পিতভাবে ধারালো চাপাতি দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি ও হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করার অভিযোগ করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর খতিব আ ন ম নুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর এলাকাবাসী ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ ঘটনায় আজ মামলার পর তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, আসামি পরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর বাবাকে আঘাত করে হত্যাচেষ্টা করেছেন। এতে নুর রহমান কানে, গলায় ও মাথায় রক্তাক্ত জখম হন।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তাঁর বাবা আ ন ম নুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে চাঁদপুর শহরের প্রফেসরপাড়া মোল্লাবাড়ী জামে মসজিদের খতিব হিসেবে নিয়োজিত আছেন। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের আগে খুতবা হিসেবে তাঁর বাবার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে আসামির আক্রোশ। প্রতি শুক্রবারের মতো গতকাল দেড়টার দিকে তাঁর বাবা বাংলায় বয়ান করলে আসামির পছন্দ না হওয়ায় হঠাৎ দাঁড়িয়ে তিনি কিছু বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু উপস্থিত মুসল্লিরা তাঁকে কথা বলার সুযোগ না দিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে জায়নামাজের মধ্যে লুকিয়ে রাখা একটি ধারালো চাপাতি নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করেন। নামাজ শেষে অধিকাংশ মুসল্লি মসজিদ থেকে বের হলে বেলা ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে ধারালো চাপাতি দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ত্রাস সৃষ্টি করতে মসজিদের ভেতরে তাঁর বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘাড়ে কোপ মারেন। কিন্তু কোপ লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে ডান কানসহ কানের পেছনে ঘাড়ের ডান পাশে লেগে গুরুতর জখম হন। এতে ১৫টি সেলাই দিতে হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, হামলার পর তাঁর বাবার চিৎকারে অন্য মুসল্লিরা এগিয়ে গিয়ে আসামিকে অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে থানায় নিয়ে যায়। মসজিদের নিয়মিত ইমামসহ অন্য মুসল্লিরা তাঁর বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গুরুতর আহত নুর রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছে পরিবার। তাঁর ছোট ছেলে রায়হান রাহি জানান, তাঁর বাবা হাসপাতালে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন। তিনি আগের চেয়ে ভালো আছেন।