
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কারখানার শ্রমিক সজল মিয়া (২০) হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভীর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আজ আদালতের শুনানিতে আইভীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আওলাদ হোসেন, জাহিদুল হক, জিয়াউল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, আবু ইশতিয়াকসহ ১০ থেকে ১২ জন অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবুল কালাম আজাদসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী।
পিপি আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক মেয়র আইভীর আইনজীবী আদালতে জামিনের আবেদন করলে তাঁরা জামিনের বিরোধিতা করেন। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আইভীর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের সামনে অবস্থানরত ছাত্র-জনতাকে প্রতিহত করতে আসামিরা ককটেল বিস্ফোরণ করে ভীতি তৈরি, এলোপাতাড়ি গুলি ও মারধর করে অনেককে গুরুতর জখম করেন। এ সময় আসামিদের ছোড়া গুলি জুতা কারখানার শ্রমিক সজল মিয়ার পেটে বিদ্ধ হয়। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির মা রুনা বেগম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম, সাবেক সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। নিহত সজল সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার হাসান আলীর ছেলে। আইভী ওই মামলার ৬ নম্বর আসামি। আজ আইনজীবীদের মাধ্যমে আইভী জামিনের আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আওলাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় আইভীর নাম ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। কে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন, কার গুলিতে ভুক্তভোগী মারা গেছেন, তাঁর নাম এজাহারে নেই। এ জন্য তাঁরা আদালতে তাঁর (আইভী) জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করেন। এতে তাঁরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাঁরা জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে যাবেন।
গত ৯ মে ভোরে শহরের দেওভোগের বাড়ি থেকে সাবেক মেয়র আইভীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। তাঁকে গত বছরের ২০ জুলাই পোশাককর্মী মিনারুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। আইভীর বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলাসহ মোট ছয়টি মামলা আছে। গ্রেপ্তারের পর থেকে আইভী কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আছেন।