আটক যুবলীগ নেতাকে পালাতে সহায়তা করায় যুবদল নেতা বহিষ্কার

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় পুলিশের অভিযানে আটক সোহাগ মিয়া নামের যুবলীগের এক নেতাকে পালাতে সহযোগিতা করার অভিযোগে যুবদলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক আল আমিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বহিষ্কার হওয়া যুবদলের ওই নেতার নাম মিজান মিয়া ওরফে মিজানুর রহমান। তিনি উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর সহযোগিতায় পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়া সোহাগ ইসলাম একই ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত ১৭ মে এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে। এ মামলায় যুবদলের নেতা মিজানসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে।

বহিষ্কারাদেশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন। ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদের নির্দেশনায় মিজানুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এর আগে যুবলীগ নেতাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মিজানের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা যুবদল। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে মিজানকে।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৫ মে রাত ১১টার দিকে পুলিশ উপজেলার বুধন্তি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা সোহাগ মিয়াকে আটক করে। এর পরপরই বুধন্তি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মিজানসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি পুলিশের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র দাসকে ধাক্কা দিয়ে সোহাগ মিয়াকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন মিজান।

এ ঘটনায় ১৭ মে সকালে এসআই সুমন চন্দ্র দাস বিজয়নগর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় যুবলীগ নেতা সোহাগ ইসলাম (৩৫), যুবদলের নেতা ‍মিজান মিয়া (৪২), ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক কাপ্তান মিয়া (৩০) ও ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি রোমান খানকে আসামি করা হয়।

৩৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মুদিদোকানের এক কোনায় লাল রঙের শার্ট পরে যুবলীগের নেতা সোহাগ দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর ঠিক সামনে যুবদলের নেতা মিজান, মিজানের সামনে উপজেলার ইসলামপুর ফাঁড়ির এসআই সুমন চন্দ্র দাস মুঠোফোনে কারও সঙ্গে কথা বলছেন। এসআই সুমন চন্দ্রের পেছনে একজন, ডান দিকে আরেকজন যুবক এবং দোকানের ভেতরে দোকানি দাঁড়িয়ে আছেন। যুবদলের নেতা মিজান কথা বলতে বলতে ধীরে ধীরে এসআই সুমন চন্দ্রের দিকে এগিয়ে যান। মিজান একপর্যায়ে নিজের শরীর দিয়ে এসআই সুমন চন্দ্র দাসকে পেছনের দিকে ঠেলে নিয়ে যান। মুহূর্তের মধ্যেই যুবলীগ নেতা দোকান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। এরপরই এসআইকে যুবলীগ নেতার পেছনে ছুটতে দেখা যায়।

বহিষ্কার হওয়া যুবদলের নেতা মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বহিষ্কারাদেশ দেখেছি। কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সাত দিনে মধ্যেই আমি জবাব দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। পুরো ভিডিও ফেসবুকে দেওয়া হয়নি। পুলিশ এসে ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি রোমান খানের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছিল। পুলিশের আচরণ এখনো পরিবর্তন হয়নি। তাই পুলিশকে ধাক্কা দিয়েছিলাম। পালাতে সহায়তা করিনি।’