
পাবনার ঈশ্বরদীতে ডায়রিয়া পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন করে আরও ৪৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর আগে গত তিন দিনে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৯৯ জন। এ নিয়ে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৪৭। রোগীদের অধিকাংশই ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ইডিজেড) শ্রমিক।
এদিকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল রোববার রাতে বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কনা খাতুন (২৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। কনা উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের খমিন ইসলামের স্ত্রী। তিনি ইপিজেডে আইএইচএম নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছিলেন।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ সোমবার দুপুরে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইইডিসিআর) ছয় সদস্যর একটি প্রতিনিধিদল ঈশ্বরদী পৌঁছেছেন। হঠাৎ কেন এত মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁরা তা পর্যবেক্ষণ ও নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করবেন।
ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম কনার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি জানান, কনা খাতুন শনিবার দুপুরের পর থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। এ অবস্থাতেই রোববার কর্মক্ষেত্রে আসেন। এদিন বেলা দুইটা থেকে তাঁর বমি শুরু হয়। পরে ইপিজেড হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সন্ধ্যায় তাঁকে বাড়ি পাঠানো হয়। বাড়িতে যাওয়ার পর রাতে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি নিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই কনার মৃত্যু হয়।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পরপর নতুন রোগী হাসপাতালে আসছেন। অনেকে আবার চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। সোমবার বিকেল পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৪৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে মোট রোগী ভর্তি হলেন ২৪৭ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আলী এহসান বলেন, রোগীর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে পরিসংখ্যান ঠিক রাখা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি বেশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিষয়টি ঢাকায় জানানো হয়েছিল। ঢাকার আইইইডিসিআর থেকে ছয় সদস্যর একটি প্রতিনিধিদল ঈশ্বরদীতে পৌছেছে। তাঁরা বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঈশ্বরদী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘ঈশ্বরদী ইপিজেডে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ইতিমধ্যেই প্রতিটি কারখানার খাবার পানি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। কারখানা এলাকা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে। আমরা নিজেরাও বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।’