Thank you for trying Sticky AMP!!

রায়পুরায় থানাহাজতের শৌচাগার থেকে আসামির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

গত সোমবার রাতে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আটরশি দরবার শরিফ এলাকা থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ

নরসিংদীর রায়পুরা থানার হাজতের শৌচাগার থেকে সুজন মিয়া (৩৫) নামের এক আসামির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে ওই শৌচাগারের ভেন্টিলেটরের রডের সঙ্গে পরনের শার্ট গলায় প্যাঁচানো অবস্থায় ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়।

সুজন মিয়া রায়পুরা উপজেলার পৌর এলাকার মামুদপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে। এর আগে গত রোববার ভোরে গৃহবধূ লাভলী আক্তারকে (৩০) ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগ ওঠে স্বামী সুজন মিয়ার বিরুদ্ধে। এরপর সোমবার রাতে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আটরশি দরবার শরিফ এলাকা থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ সকাল থেকে সুজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করার কথা ছিল।

লাভলী আক্তার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বলেন, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে সুজন মিয়াকে আদালতে নেওয়া হয়। আদালতের বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর গতকাল বিকেলে সুজনকে রায়পুরা থানাহাজতে রাখা হয়। হাজতে সুজনের তাঁর সঙ্গে আরও এক আসামি ছিলেন।

ওই আসামির বরাত দিয়ে এসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, সুজন সারা রাত ঘুমাননি। কেবল ছটফট করেছেন। আজ সকালে সুজন শৌচাগারে যান। দীর্ঘক্ষণ পার হয়ে গেলেও সুজন শৌচাগার থেকে বের হচ্ছিলেন না। পরে সকাল ১০টার দিকে হাজতে খাবার দিতে আসা এক নারী সেখানে গিয়ে দেখেন, শৌচাগারের ভেন্টিলেটরের রডের সঙ্গে পরনের শার্ট গলায় পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন সুজন। খবর পেয়ে থানায় অবস্থানরত পুলিশ সদস্যরা সুজনকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কে এম এম জাহাঙ্গীর বলেন, সুজন মিয়া নামের ওই ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁর গলায় ফাঁস নেওয়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে প্রাথমিকভাবে শরীরে আর কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

এদিকে সুজনকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল নরসিংদী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আল আমিন পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার সুজন মিয়া পুলিশের কাছে স্ত্রী লাভলী আক্তারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

সুজনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছিল, ১৩ বছর আগে সুজন ও লাভলীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাঁদের দুই মেয়ে আছে। সাত বছর আগে সুজন মিয়া বিদেশে যান এবং গত দুই মাস আগে দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার আগেই তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সম্প্রতি সুজনের মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়, তাঁর স্ত্রী মুঠোফোনে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ বাড়তে থাকে। ঘটনার দিন রাতভর এসব নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। উত্তেজিত সুজন মিয়া ভোরের আগে স্ত্রী লাভলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন।

জানতে চাইলে আজ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই সুজনের লাশ উদ্ধারের বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিস্তুারিত জানানো হবে।