
সিলেটবাসীর সঙ্গে উন্নয়ন বৈষম্য ও বঞ্চনার প্রতিবাদে নগরের একটি প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে গণ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ অংশ নিয়েছেন।
আজ রোববার বেলা ১১টা থেকে নগরের সিটি পয়েন্ট থেকে সুরমা পয়েন্ট সড়কে অবস্থান নিয়ে আরিফুল হকের নেতৃত্বে লোকজন গণ-অবস্থান শুরু করেন। বেলা একটার দিকে আরিফুলের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীরা সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে উন্নয়ন বৈষম্য দূর করার দাবিতে নানা স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। বেলা সোয়া তিনটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কর্মসূচি চলছিল।
‘সিলেট আন্দোলন’-এর ব্যানারে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। কর্মসূচির শুরুতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সিলেটের সঙ্গে উন্নয়ন নিয়ে চরম বৈষম্য করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমরা রাজপথ দখলে নিলাম। সরকারের যৌক্তিক জবাব না পাওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। সরকারের সুস্পষ্ট কোনো ঘোষণা ছাড়া কেউ রাজপথে ছেড়ে যাবেন না। যেহেতু সরকারের স্থানীয় প্রতিনিধি হচ্ছেন জেলা প্রশাসক, তাই তাঁর কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি (জেলা প্রশাসক) সরকারের সঙ্গে সিলেটবাসীর দাবির বিষয়ে আলোচনা করে নিশ্চয়ই সমাধানের একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত দেবেন।’
আরিফুল হকের বক্তব্য শেষে বিভিন্ন সংঠনের নেতা ও বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য শুরু করেন। কর্মসূচির শুরু থেকেই সিটি পয়েন্ট থেকে সুরমা পয়েন্ট সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরের কুমারপাড়া এলাকার নিজ বাসভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন আরিফুল হক চৌধুরী। ওই সভা থেকে সিলেট অঞ্চলের ন্যায্য দাবি আদায়ে ‘সিলেট আন্দোলন’ নামে একটি সর্বজনীন প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়। এতে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিক, ধর্মীয় ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা যুক্ত হয়েছেন।
এ বিষয়ে আরিফুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সিলেটের উন্নয়ন বৈষম্য ও সরকারি প্রকল্পে অবহেলার প্রতিবাদে একটি অরাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছে। গত ১২ অক্টোবর নগরের কোর্ট পয়েন্টের সমাবেশ থেকে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। এরপরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ কারণেই এবার গণ-অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। উন্নয়ন বৈষম্যের অবসান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বেলা আড়াইটার দিকে যোগাযোগ করলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটু পর আমি সেখানে যাব। সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে তাঁদের দাবির বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ করব। আলাপের মাধ্যমে নিশ্চয়ই একটা সমাধান বের হবে।’