ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল, ও সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের প্রার্থীরা। গতকাল রাত একটার দিকে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায়
ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল, ও সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের প্রার্থীরা। গতকাল রাত একটার দিকে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায়

চাকসু নির্বাচন

ছাত্রশিবিরের প্যানেলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’-এর বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে ছাত্রদল এবং ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এ সময় ‘বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের কয়েকজন প্রার্থীও সঙ্গে ছিলেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে প্রজেকশন মিটিং করে। সেখানে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করে প্রচারণা চালানো হয়েছে, যা আচরণবিধির লঙ্ঘন।

অভিযোগ দেওয়ার সময় ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের পক্ষে ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন, জিএস প্রার্থী শাফায়েত হোসেন, এজিএস প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান; সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের পক্ষে জিএস প্রার্থী মো. সাকিব মাহমুদ এবং বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবির বিন জাবেদ ও এজিএস প্রার্থী পলাশ দে উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, ‘চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট নিয়মিতভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আসছে। এ পর্যন্ত আমরা মোট আটটি অভিযোগ করেছি। কিন্তু কমিশন এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাতে অভিযোগ জানানোর পর কমিশন আমাদের জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার বেলা একটার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিবির–সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘প্রজেকশন মিটিং তো মূলত ভোট চাওয়ার জন্যই করা হয়। আমরা নিয়ম মেনেই পাঁচটি নারী হলে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে একটি প্রজেকশন মিটিং করেছি। জিরো পয়েন্টে যে প্রজেকশন মিটিং হয়েছে, সেটির জন্য কমিশনের অনুমতি ছিল।’

চাকসু নির্বাচনী আচরণবিধির ৪(খ) ধারায় বলা আছে, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচারণা চালানো যাবে। তবে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্তই প্রচার কার্যক্রম সীমিত রাখতে হবে। সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাস এলাকায় কোনো ধরনের সাউন্ড সিস্টেম বা মাইক ব্যবহার করা যাবে না, যাতে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত না ঘটে।

এ ছাড়া ৬(ঘ) ধারায় বলা আছে, একজন প্রার্থী বা একটি প্যানেলের পক্ষে প্রতিটি হলে সর্বোচ্চ একটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে সর্বমোট তিনটি প্রজেকশন মিটিং করা যাবে। একই সঙ্গে ৬(ঞ) ধারায় উল্লেখ রয়েছে, সভা-সমাবেশে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বা অডিটরিয়ামের ভেতরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে, তবে কোনো অবস্থাতেই সন্ধ্যার পর ব্যবহার করা যাবে না।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আজ মঙ্গলবার বেলা একটায় আচরণবিধি কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে তিন দশক পর আগামীকাল বুধবার চাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। একই সঙ্গে হবে হল সংসদের নির্বাচনও। গতকাল ছিল নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন।