এনসিপির শ্রমিকনেতাদের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা, সব আসামি বিএনপির

মামলা
প্রতীকী ছবি

তিন সপ্তাহ আগে বাগেরহাটের মোংলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিকনেতাদের ওপর হামলার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মোংলা থানায় করা ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে ২১ জনকে। আসামিদের সবাই বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এনসিপির শ্রমিক শাখার নেতা তিতুমীর চোকদারের করা ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৩৪ থেকে ৩৫ জনকে।

এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে অন্যতম মোংলা পোর্ট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক জুলফিকার আলী। মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে আজ বুধবার এ মামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দলটির সমর্থিত লোকজন মোংলা বন্দর শ্রমিক সংগঠন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং সাধারণ শ্রমিকদের স্বার্থপরিপন্থী কর্মকাণ্ড চালায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী বন্দর শ্রমিক সংগঠন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাঁর অনুসারীদের দিয়ে পরিচালনা শুরু করেন। এ বিষয়ে এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে সাধারণ শ্রমিকেরা ২৯ এপ্রিল শ্রমিক সংঘ চত্বরে সভা আহ্বান করেন। আগের দিন সভার মঞ্চ প্রস্তুতির সময় বিএনপির নেতৃত্বাধীন শ্রমিকেরা এনসিপি–সমর্থিত শ্রমিকদের ওপর হামলা চালান, মারধর করেন এবং সভার মঞ্চ ও সাজসরঞ্জাম ভাঙচুর করেন।

উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ২৯ এপ্রিল বিকেলে নির্ধারিত সময়ে এনসিপি–সমর্থিত শ্রমিকেরা সমাবেশের প্রস্তুতি নিলে একই স্থানে সমাবেশের ডাক দেন বিএনপি–সমর্থিত শ্রমিকেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে মোংলা পৌর শহরজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়ন করা হয়। এ পরিস্থিতিতে বিএনপি ও এনসিপি–সমর্থিত শ্রমিকেরা তাঁদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনে অনড় থাকেন এবং ওই দিন বিকেলে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতাসহ তাঁদের সমর্থিত স্থানীয় শ্রমিকেরা মিছিল নিয়ে শ্রমিক সংঘ চত্বরে এগিয়ে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে হট্টগোল, হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে একাধিক শ্রমিক আহত হন।

বিষয়টি নিয়ে তখন মোংলা থানায় কোনো মামলা হয়নি। এ ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার রাতে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের নেতা মো. তিতুমীর চোকদার মামলা করেন। বাদীর অভিযোগ, তাঁকেসহ এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর হামলা, মারধরসহ তাঁদের এক নারীনেত্রীকে প্রকাশ্যে রাস্তায় শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। মামলাটিতে জুলফিকার আলীসহ বিএনপি ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের ২১ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

মামলাকে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক উল্লেখ করে এর প্রতিবাদে স্থানীয় বিএনপি সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বুধবার বিকেলে পৌর শহরে এই প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ হয়। এর আগে দুপুরে মোংলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এমরান হোসেন বলেন, বিএনপির জনপ্রিয়তা ও ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পরিকল্পিতভাবে এ মামলা করা হয়েছে। দ্রুত মামলা প্রত্যাহার না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী বলেন, ‘আমার জনপ্রিয়তা ও বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এ মামলা করা হয়েছে।’