গফরগাঁও ফায়ার সার্ভিস থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়
গফরগাঁও ফায়ার সার্ভিস থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়

গফরগাঁওয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ফায়ার সার্ভিস কর্মী নুরুল হুদা

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নিজ গ্রামের বাড়িতে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মী নুরুল হুদা। উপজেলার ধামাইল গ্রামের বাড়িতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

আজ সকাল ১০টায় উপজেলার ধামাইল গ্রামে নুরুল হুদার গার্ড অব অনার প্রদান শেষে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমির সালমান রনির নেতৃত্বে গফরগাঁও থানা পুলিশের একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় ময়মনসিংহ বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী ও গফরগাঁও ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার দেলোয়ার হোসেন গফরগাঁও ফায়ার সার্ভিস থেকে গার্ড অব অনার দেন। এরপর স্থানীয় লোকজনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা জানাজায় অংশ নেন। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

নুরুল হুদা উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের ধামাইল গ্রামের আবদুল মনসুর ও শিরিনা খাতুন দম্পতির ছোট ছেলে। বড় ছেলে শামছুল হুদা তিন বছর আগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় নুরুল হুদা ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ফায়ার সার্ভিসের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন।

বুধবার রাত ১২টার দিকে তাঁর মরদেহ বহনকারী গাড়ি পৌঁছায় গ্রামের বাড়িতে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ভিড় করেন সেখানে। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ।

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নিজ বাড়ির সামনে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় নুরুল হুদাকে

সন্তান হারিয়ে শোকার্ত আবদুল মনসুর বলেন, ‘আল্লায় আমারে এ কোন পরীক্ষায় ফেলল। নিজের চোখের সামনে সন্তানের দাফন হলো। আমার বাঁচনের আর কোনো অবলম্বন রইল না।’

মা-বাবা হারিয়েছেন সন্তানকে, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আসমা খাতুন হারিয়েছেন স্বামীকে। তিন বছরের ছেলে আবিদ আহসান এখনো বুঝতে পারে না কেন বাবা আর ফিরে আসছেন না। আর ১০ বছরের মেয়ে নুসরাত নেহা সব সময় বাবার ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকলেও সে কফিনের সামনে নির্বাক তাকিয়ে থাকে। আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে তৃতীয়বারের মতো বাবা হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন নুরুল হুদা। তাঁর পরিবারের সব দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের বিভাগীয় উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী।

গাজীপুরের টঙ্গীতে রাসায়নিক গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে গত সোমবার দগ্ধ হন তিনি। গতকাল বুধবার বেলা ২টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরুল হুদা মারা যান।