চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এনআই এগ্রো থেকে গতকাল গভীর রাতে সব গরু লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতেরা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এনআই এগ্রো থেকে গতকাল গভীর রাতে সব গরু লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতেরা

স্বাবলম্বী হতে চাকরি ছেড়ে খামার করেন, এক রাতেই তাঁকে নিঃস্ব করে সব গরু লুট

স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় চার বছর আগে চাকরি ছেড়ে গরুর খামার গড়ে তুলেছিলেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের উদ্যোক্তা নজরুল ইসলাম। খামারে ছিল ১৫ লাখ টাকা দামের ১৩টি গরু। খামারের গরু ও গরুর দুধ বিক্রি করে লাভের মুখও দেখছিলেন। কিন্তু এক রাতেই নিঃস্ব হয়ে গেলেন তিনি। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের মাইলের মাথা এলাকায় তাঁর গড়ে তোলা ‘এন আই’ অ্যাগ্রো নামের খামারে হঠাৎ হানা দেয় ডাকাতের দল। খামারে থাকা লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুটে নেয় ১২টি গরু। এ ঘটনায় বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে সীতাকুণ্ড থানায় ডাকাতির মামলা করেছেন। তবে পুলিশ এখনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

খামারি নজরুলের সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। নিজের গড়ে তোলা খামারের গরু হারিয়ে নির্বাক তিনি। স্বজনেরা জানালেন, একেবারেই ভেঙে পড়েছেন তরুণ এই উদ্যোক্তা। একটি মোটরসাইকেল কোম্পানির চট্টগ্রাম জেলার ব্যবস্থাপক ছিলেন তিনি। চার বছর আগে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। এরপর নিজ এলাকায় গরুর খামার গড়ে তোলেন। প্রতিবছর ঈদুল আজহায় তিনি গরু বিক্রি করতেন। পরে আবার নতুন করে গরু কিনতেন। এ ছাড়া তাঁর কয়েকটি গাভি ছিল। এসব গাভির দুধ বিক্রিও ছিল তাঁর আয়ের উৎস।

নজরুলের খামারে মোট গরু ছিল ১৩টি। এর মধ্যে চারটির অংশীদার ছিলেন তাঁর চাচা ইসমাইল হোসেন। গতকাল রাতে তিনিই খামারটিতে পাহারায় ছিলেন। রাত দুইটার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি ডাকাত দল এ খামারে আসে। তারা খামারের বেড়া কেটে ভেতরে ঢুকে ইসমাইলকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এরপর একে একে ১২টি গরু ট্রাকে তুলে নেয় তারা।

নজরুল ইসলামের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতেরা গরুগুলো তুলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে ঢাকার দিকে চলে যায়। লুট হওয়া গরুগুলোর মূল্য ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

খামারে থাকা নজরুলের চাচা ইসমাইল হোসেন গতরাতের ডাকাতির ঘটনার বিবরণ দেন। তিনি বলেন, ‘খামারে ২০-২৫ জন ডাকাত মুখ বেঁধে প্রবেশ করে। তাদের হাতে অস্ত্রশস্ত্র ছিল। ডাকাতেরা আমার দুটি হাত পেছনে বেঁধে ঘর থেকে বাইরে এনে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর আমার চোখের সামনে গরুগুলো গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়। আমি অনেক কষ্টে বাড়িতে আসি। এরপর হাতের বাঁধন খোলার পর ঘটনাটা পরিবারের সদস্যদের বলি। পুলিশের জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি জানানোর পর কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি বিভিন্ন থানায় খুদেবার্তা দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গরু উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।’