
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) উপাচার্য নিয়োগ এবং বেতন-ভাতা নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলা ভাস্কর্যের পাদদেশে এই কর্মসূচির আয়োজন করে কুয়েট কর্মচারী সমিতি।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। ফলে বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তাঁরা বলেন, কুয়েটের মতো একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। ফলে প্রশাসনিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, এমনকি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-বোনাসও বন্ধ হয়ে গেছে। কুয়েটের ইতিহাসে এই প্রথম পবিত্র ঈদুল আজহার মতো উৎসবেও বেতন-বোনাস পাওয়া যায়নি। কর্মচারীদের পরিবারগুলো চরম হতাশা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে সময় পার করেছে।
কর্মচারী সমিতির সভাপতি এরশাদ আলীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হাসিব সরদারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক জালাল মুন্সি, সাবেক সভাপতি ইমদাদ মোড়ল, সাংগঠনিক সম্পাদক সম্রাট কাজী, সিনিয়র সহসভাপতি শাহরিয়ার খান, সহসাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সহসভাপতি আসাদ মোড়ল, কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব এবং সভাপতি মো. রোকনুজ্জামান। মানববন্ধনে কর্মচারী নেতাদের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি বাস্তবায়িত না হলে রাজপথে আন্দোলন ও কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি কেন্দ্র করে কুয়েটে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার। পরে ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক মো. হজরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে শিক্ষকদের বিরোধিতার মুখে মাত্র তিন সপ্তাহের মাথায় ২২ মে তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে কুয়েটে উপাচার্য পদ শূন্য রয়েছে। উপাচার্য না থাকায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বেতন তুলতে পারছেন না। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোও থমকে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুয়েটে সব ধরনের আর্থিক ক্ষমতা উপাচার্যের হাতে কেন্দ্রীভূত। তাঁর স্বাক্ষর ছাড়া এক টাকার বিলও পাস হয় না; কিন্তু অনুপস্থিতি ও পদত্যাগ মিলিয়ে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে কুয়েটে উপাচার্য নেই। এ ছাড়া কুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষা প্রায় পাঁচ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থী সেশনজটের আশঙ্কায় রয়েছেন।