
চট্টগ্রামের খ্রিষ্টানপল্লিগুলোতে গতকাল বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে বড়দিনের উৎসব। নগরের পাথরঘাটা, পাহাড়তলী, জামালখান, বাহির সিগন্যাল এলাকার খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বাড়ির সামনে লাগানো হয়েছে সুসজ্জিত ক্রিসমাস ট্রি, যিশুর জন্মস্থান নাজেরেথের গোয়ালঘরের অনুকরণে তৈরি বাঁশের চৌকোনা বাক্স আর বড় লাল তারা। আজ দিনভর বাড়িতে বাড়িতে চলেছে স্বজন ও পরিচিতজনদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও খাওয়াদাওয়ার আয়োজন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে এবং গতকাল বুধবার নগরের গির্জাগুলোতে বড়দিনের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। মূলত বুধবার রাতের বিশেষ প্রার্থনা, খ্রিষ্টীয় গান ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা।
বড়দিন উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগরের গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। আলোকসজ্জায় ঝলমল করছিল বিভিন্ন গির্জার প্রাঙ্গণ। যিশুখ্রিষ্টের জন্মমুহূর্তসহ তাঁর জীবনের বিভিন্ন ঘটনার আদলে সাজানো প্রতিকৃতি, যা দেখতে ভিড় করছেন ভক্তরা।
এ ছাড়া বড়দিনের কেক কাটা হয় গির্জা ও বিভিন্ন বাসাবাড়িতে। গির্জাগুলোতে প্রার্থনার সময় সান্তা ক্লজের কাছ থেকে উপহার নিতে ব্যস্ত ছিল শিশু-কিশোরেরা। নগরের বড় হোটেলগুলোতেও আছে বড়দিনের বিশেষ আয়োজন।
আজ সকাল ৯টায় নগরের পাথরঘাটার পবিত্র জপমালা রানি ক্যাথিড্রাল গির্জায় বড়দিনের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থনায় দেশ-জাতির সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করা হয়। প্রার্থনা শেষে সমবেতরা একে অন্যের সঙ্গে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করে। একই গির্জায় বুধবার রাতে দুই দফা প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম প্রার্থনা পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম মহা ধর্ম প্রদেশের ভিকার জেনারেল ফাদার টেরেন্স রডিক্স। রাত ১২টায় দ্বিতীয় প্রার্থনা পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম মহা ধর্ম প্রদেশের আর্চবিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার। প্রার্থনায় লরেন্স সুব্রত হাওলাদার বলেন, ‘প্রভু যিশু এই পৃথিবীতে এসেছেন শান্তি ও ভালোবাসার বার্তা নিয়ে। আমরা একে অন্যকে যেন এই ভালোবাসা দেখাতে পারি। আমাদের এই দেশ যেন শান্তিতে থাকে। আমরা যেন সবাই একে অন্যের মাঝে শান্তি ছড়িয়ে দিতে পারি, এটাই প্রার্থনা।’
আজ সন্ধ্যায় পাথরঘাটা গির্জায় বড়দিন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কেক কাটা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের উপস্থিতিতে সর্বধর্মীয় সম্মিলনের আয়োজন করা হয়েছে।
বড়দিন উপলক্ষে নগর ও জেলার গির্জাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ ও র্যাবের টহল দল গির্জা এলাকায় টহল দেয়।