নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বেড়িবাঁধ স্পর্শ করেছে জোয়ারের পানি। আজ সকালে তোলা
নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বেড়িবাঁধ স্পর্শ করেছে জোয়ারের পানি। আজ সকালে তোলা

নিম্নচাপের প্রভাবে বন্ধ নৌ চলাচল, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সন্দ্বীপ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ। নিম্নচাপের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি গতকাল বুধবার থেকেই সাগর উত্তাল রয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের সঙ্গে সব ধরনের নৌ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

আজ বৃহস্পতিবার থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হওয়ায় কার্যত সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সন্দ্বীপ। আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে আসার আগপর্যন্ত এই নির্দেশনা বহাল থাকবে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (পোর্ট অফিসার) মো. কামরুজ্জামান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘সাধারণত ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বললে আমরা নৌযান না চালানোর নির্দেশনা দিই। আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া হবে। এই সময়ে কোনো নৌযান চলাচল করবে না।’

সন্দ্বীপ থেকে পূর্ব উপকূলে চট্টগ্রামে যাত্রী পারাপারে রয়েছে একাধিক ঘাট। যোগাযোগের প্রধান ঘাট কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাট হয়ে স্পিডবোট, কাঠের তৈরি লঞ্চ ও বিআইডব্লিউটিএর জাহাজ এমভি মালঞ্চ চলাচল করে। সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট থেকে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়ায় চলাচল করে ফেরি কপোতাক্ষ। পশ্চিম উপকূলের চরলক্ষ্মী ঘাট দিয়ে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে যাত্রী পারাপারের একটি ঘাট রয়েছে। এখানে প্রতিদিন কাঠের তৈরি একটি লঞ্চ চলাচল করে। আজ এসব ঘাটের কোনোটিতেই কোনো ধরনের নৌযান চলাচল করেনি বলে জানা গেছে।

সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিগ্যান চাকমা এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ৩ নম্বর সতর্কসংকেত জারি হওয়ায় নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এরপরও জরুরি প্রয়োজনে দু-একটি নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে এখন কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জরুরি সার্ভিস দেওয়ার মতো অবস্থা নেই।

সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক ওমর ফয়সাল জানিয়েছেন, আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় তাঁদের স্পিডবোটগুলো নিরাপদে সরিয়ে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বোট চলাচল বন্ধ থাকবে। বিরূপ আবহাওয়ায়ও বিদেশগামী একাধিক যাত্রী ঘাটে গিয়ে পারাপারের অপেক্ষায় ছিলেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুর রহমান খান প্রথম আলোকে জানান, আগামীকাল শুক্রবারও আবহাওয়া পরিস্থিতি বিরূপ থাকবে। স্থানভেদে এখন ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। শনি বা রোববার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

এদিকে আজ সকাল ১০টা থেকে সন্দ্বীপ উপকূলে বেড়েছে ঝোড়ো হাওয়ার তীব্রতা। সন্দ্বীপের সুরক্ষা বেড়িবাঁধের বাইরের অংশে উপচে পড়ছে জোয়ারের পানি। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বাতাসের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় অন্য সময়ের তুলনায় তিন থেকে পাঁচ ফুট বেড়েছে জোয়ারের উচ্চতা।