
জয়পুরহাট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ সাতজন আহত হয়েছেন। আহত সবাই জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় কলেজটির সামনে এ ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত সম্মেলন আর হয়নি।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ছাত্রদল নেতা তামিম (২২), আরিফুল ইসলাম (২৫), শাহরিয়ার কবির (২৩), রাফি (২৬), সোয়ায়েব হোসেন (২৪), সোহান কবির (২৮) ও পুলিশের উপপরিদর্শক আরিফুল ইসলাম (৪৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জয়পুরহাট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ২০২১ সালে গঠিত হয়। দীর্ঘদিন পর শুক্রবার বেলা তিনটায় কলেজ শাখা ছাত্রদলের সম্মেলন আয়োজন করা হয় কলেজে। সম্মেলন ঘিরে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ছয়জন সহকারী নির্বাচন কমিশনারকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সার্বিক তত্ত্বাবধানের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের টিম-১৬–কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রথমে ৫৪৬ জনের একটি ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় ছাত্রদলের কয়েকজনের নাম না থাকার অভিযোগ তোলা হয়। এরপর ভোটার তালিকা সংশোধন করে ৫৫৩ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে ছাত্রদলের একটি পক্ষ কাউন্সিল বয়কটের ডাক দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে শহরে মশাল মিছিল করে।
শুক্রবার সকাল থেকে তাঁরা কলেজে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন। বেলা তিনটায় সম্মেলনের সময় নির্ধারণ করা হলে ছাত্রদলের কলেজ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর চৌধুরী ও আহাদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি পক্ষ বেলা ১১টা থেকে কলেজে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা ‘অবৈধ কাউন্সিল, মানি না, মানব না’, ‘বয়কট বয়কট, টিম-১৬ বয়কট’, ‘একতরফা কাউন্সিল, মানি না, মানব না’, ‘অর্থের বিনিময়ে কাউন্সিল, মানি না, মানব না’ বলে স্লোগান দেন। এমন অবস্থায় বেলা তিনটায় সম্মেলন করতে পারেননি কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আরেক পক্ষ কলেজ ছাত্রদলের নেতা হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি মিছিল নিয়ে কলেজ ফটকের দিকে যায়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এতে এক পুলিশ সদস্যসহ সাতজন আহত হন। তাঁদের জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
দোগাছী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সোহান কবির বলেন, ‘আমি কাউন্সিলের দায়িত্বে ছিলাম। কলেজে যাওয়ার সময় আমার ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়। নিরাপদ দূরত্বে থাকার পরও পাথর এসে মাথায় লেগেছে। এ ঘটনায় ছাত্রদলের আরও কয়েকজন নেতা-কর্মীও আহত হয়েছেন।’
জয়পুরহাট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের কাউন্সিলের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব আছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম হোসেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে কাউন্সিল হয়নি। সংকট সমাধানে আমরা রাতে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসব।’
জয়পুরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাজমুল কাদের বলেন, ছাত্রদলের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে এ ঘটনায় থানায় কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি।