চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশের (লিমিটেড) তৈরি সাত বোতল বিলাতি মদসহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে দর্শনা পৌর এলাকার আনোয়ারপুর হঠাৎপাড়া এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন দর্শনা পৌর এলাকার আনোয়ারপুর হঠাৎপাড়া এলাকার মো. আমিনুল ইসলাম (৪০) ও মো. জাহিদ হোসেন (২৭)। তাঁদের কাছ থেকে ‘চার বোতল কেরুজ গোল্ড রিব্যান্ড গেইন’ নামের বিলাতি মদ; দুই বোতল কেরুজ জরিনা ভদকা ও এক বোতল কেরুজ ফাইন ব্র্যান্ডি নামের বিলাতি মদ উদ্ধার করা হয়। প্রতিটি বোতলের ৭৫০ মিলিলিটার পরিমাপে মদ আছে। এই সাত বোতল মদের দাম ২১ হাজার টাকা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুনের দাবি, আমিনুল চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও জাহিদ তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
এদিকে কেরুর ডিস্টিলারি (মদসহ বিভিন্ন স্পিরিট তৈরির কারখানা) পর্যবেক্ষণে বিপুলসংখ্যক ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন, কেরুর নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী এবং নিয়োজিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের কঠোর প্রহরার মধ্যে সাত বোতল বিলাতি মদ বাইরে পাচার হওয়ার ঘটনা অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে। সবার প্রশ্ন, কেরুর মদ কারখানা থেকে বাইরে বের হলো কীভাবে?
মহাব্যবস্থাপকের (ডিস্টিলারি) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপক (ফরেন লিকার) রাজিবুল ইসলাম জানান, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের একজন কর্মকর্তা আমাদের জানিয়েছিলেন কেরু রিলেটেড মাদক নিয়ে রাতে তাঁরা একটি অভিযান পরিচালনা করবেন। কিন্তু অভিযান পরিচালনা হয়েছে কি না জানতে পারিনি।’ এক প্রশ্নের জবাবে রাজিবুল বলেন, ‘ফটকসহ গোটা ডিস্টিলারিতে তিন স্তরের নিরাপত্তা রয়েছে। বোতলগুলো এমনিতেই আকারে বড়। এগুলো লুকিয়ে বের করা সম্ভব না।’ তিনি দাবি করেন, সন্দেহ হচ্ছে বোতলগুলো নকল হতে পারে।
তবে আবদুল্লাহ আল মামুন কেরুর ওই কর্মকর্তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘লেবেলকৃত বোতলগুলো ইনটেক। কেরুর তৈরি মদ প্রমাণের জন্য যা যা দরকার সবই আছে। নকল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিশ্চিত করেই বলতে পারি, মদভর্তি বোতলগুলো কেরুর তৈরি। এ ছাড়া মদের বোতলসহ আটক দুজনই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।’
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গার সহকারী পরিচালক মো. শরিয়ত উল্লাহ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞপ্তিটি বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। যাতে বলা হয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয় বিভাগীয় স্টাফদের নিয়ে দর্শনা থানাধীন আনোয়ারপুর হঠাৎপাড়া মোড় এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে সাতটায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় আনোয়ারপুর হঠাৎপাড়ার আমিনুল ও জাহিদ নামে দুজনের কাছে থাকা প্লাস্টিকের ব্যাগের ভেতর থেকে কেরুর তৈরি সাত বোতল বিলাতি মদ উদ্ধার করা হয়। এরপর আলামতসহ আসামিদের দর্শনা থানায় সোপর্দ করা হয়।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফুল কবীর প্রথম আলোকে জানান, এ ঘটনায় আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২০১৮ সালের ৩৬(১)-এর ২৪ (ক) ও ৪০ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।