
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ঘরের হাঁড়ি–পাতিল চুরির অভিযোগে মো. মোজাম্মেল (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে পিটুনির ১৩ ঘণ্টা পর তিনি মারা গেছেন। এ ঘটনায় কাপাসিয়া থানায় আজ রোববার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন ওই ব্যক্তির স্ত্রী।
গতকাল শনিবার রাত আটটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোজাম্মেলের মৃত্যু হয়। এদিন সকাল সাতটার দিকে কাপাসিয়ার সনমানিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণগাঁও গ্রামে তাঁকে পিটুনি দেওয়া হয়। মো. মোজাম্মেল ওই গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি এক মেয়ে ও দুই ছেলের জনক। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন নিহত মোজাম্মেলের স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া। মামলায় আসামি হিসেবে ৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও কয়েকজনকে। রাজিয়া জানান, তাঁর স্বামী কৃষক। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় আইনি প্রতিকার চান।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সনমানিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণগাঁও গ্রামের মোছা. খুকি আক্তার নামের এক গৃহবধূর বাড়িতে হাঁড়ি–পাতিল চুরির ঘটনা ঘটে। মো. মোজাম্মেল হাঁড়ি–পাতিল চুরি করেছেন সন্দেহে ওই গ্রামের কয়েকজন মিলে তাঁকে মারধর করেন। পিটুনিতে মোজাম্মেল আহত হলে তাঁকে স্বজনেরা উদ্ধার করে দ্রুত কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে পরে নেওয়া হয় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত আটটায় তাঁর মৃত্যু হয়।
মোজাম্মেল সহজ–সরল স্বভাবের ছিলেন জানিয়ে চাচাতো ভাই ওমর ফারুক বলেন, অবান্তর অভিযোগ তুলে মোজ্জাম্মেলকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। এতে তিনি গুরুতর আহন হন। পরে মৃত্যু হয়েছে। সহজ–সরল স্বভাবের মানুষটাকে পূর্বশত্রুতার জের ধরে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ১০ থেকে ১২ জন মিলে পেটানো হয়।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।