বরিশালে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী পাঁচটি লঞ্চের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বরিশাল নদীবন্দর থেকে সরাসরি ঢাকাগামী চারটি এবং ভায়া পথে চলাচলকারী একটি লঞ্চের যাত্রী নামিয়ে যাত্রা বাতিলের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার আগপর্যন্ত এ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল নদীবন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক জুলফিকার আলী। তিনি বলেন, ‘ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকা অফিসের নির্দেশে বরিশাল-ঢাকা রুটের পারাবাত-১১ ও ১২, এম খান-৭, সুরভী-৭ এবং ভায়া পথের সুন্দরবন-১২ লঞ্চের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।’
ঘন কুয়াশার কারণে রোববার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা থেকে বরিশালের মুলাদী যাওয়ার পথে মেঘনা নদীতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি মহারাজ-৭। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। লঞ্চটির দোতলার বাঁ পাশের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জাকির খান নামে লঞ্চটির একজন স্টাফ জানান, অন্ধকার ও ঘন কুয়াশার কারণে নোঙর করে থাকা মালবাহী একটি জাহাজের ওপর হামলে পড়ে। এতে লঞ্চের দোতলার পাশের প্রায় ৩০ ফুট অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় দোতলায় অবস্থান করা যাত্রীরা দ্রুত নিচে নেমে নিরাপদ স্থানে সরে যান।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঘন কুয়াশায় চাঁদপুরের হাইমচর এলাকায় মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী দুই লঞ্চের সংঘর্ষে চারজন নিহত হন।
বরিশাল আবহাওয়া কার্যালয় জানায়, রোববার সারা দিনই ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা মেলেনি। এদিন জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দুই দিন—শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার ১২ দশমিক ৫ এবং বুধবার ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। নৌযোগাযোগও মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
রোববার সন্ধ্যায় বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে লঞ্চে উঠেছিলেন রহিমা বেগম নামে এক নারী। তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড শীতের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা লঞ্চে বসে থাকার পর জানানো হলো লঞ্চ ছাড়বে না। এখন দুটি বড় ব্যাগ, অন্যান্য মালামাল নিয়ে আবার বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।’