ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. কামাল, জেলা সদরের একজন ঠিকাদারসহ চারজন মিলে রেইছা-গোয়ালীখোলা সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণের কাজ করছেন। ওই সড়কের কাজে এসব বালু ব্যবহার করা হচ্ছে।
বান্দরবান সদর ইউনিয়নের গোয়ালীখোলা রোয়াজারপাড়া এলাকায় সাঙ্গু নদের চর থেকে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদের তীরবর্তী কিছু জনবসতি বিলীন হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বালু তোলার সঙ্গে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, যে স্থান থেকে বালু তোলা হচ্ছে, সেখানে রেইছা খাল ও সাঙ্গু নদ মিলিত হয়েছে। পাশেই সদর ইউনিয়নের রোয়াজারপাড়া এলাকা। খননযন্ত্র দিয়ে ওই স্থানে বালু তুলে ট্রাকে ভর্তি করতে দেখা যায়। এলাকার এক বাসিন্দা দিদারুল আলমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বালু তুলে রেশম বোর্ড এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
পরে রেশম বোর্ড এলাকায় গিয়ে ট্রাক থেকে বালু খালাস করতে দেখা যায়। সেখানে কথা হয় বালু খালাসের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক আবু তাহের ও ট্রাকচালক মো. বাবুলের সঙ্গে। তাঁরা জানান, চারটি ট্রাকে করে রোয়াজারপাড়া ঘাট থেকে বালু পরিবহন করছেন তাঁরা। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. কামাল, জেলা সদরের একজন ঠিকাদারসহ চারজন মিলে রেইছা-গোয়ালীখোলা সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণের কাজ করছেন। ওই সড়কের কাজে এসব বালু ব্যবহার করা হচ্ছে।
চরের জায়গাটি আমার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। মরা বালু জমে যাওয়ায় চরে কোনো চাষ হচ্ছে না। তাই মরা বালু তুলে রেইছা-গোয়ালীখোলা সড়কের কাজে লাগানো হচ্ছে। এই মরা বালু তোলায় চরের এবং সাঙ্গু নদের তীরের কোনো ক্ষতি হবে নামো. কামাল, সভাপতি, বান্দরবান সদর ইউনিয়ন বিএনপি
রোয়াজারপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাঙ্গু নদের গোয়ালীখোলা এলাকাটি খুবই ভাঙনপ্রবণ। ইতিমধ্যে এলাকার ৩০০ ফুটের বেশি তীর ভেঙে নদে বিলীন হয়েছে। এতে বেশ কিছু পরিবার বাড়িঘর হারিয়েছে। বালু তোলার কারণে তীরের ভাঙন আরও বাড়বে। নদের তীর ভেঙে গেলে রোয়াজারপাড়াও বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বাসিন্দারা জানান, বন্দোবস্ত পাওয়া চরের জমির মালিক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. কামাল। তিনি এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় বাসিন্দারা কেউ বালু তোলার বিষয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
জানতে চাইলে বান্দরবান সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. কামাল বলেন, ‘চরের জায়গাটি আমার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। মরা বালু জমে যাওয়ায় চরে কোনো চাষ হচ্ছে না। তাই মরা বালু তুলে রেইছা-গোয়ালীখোলা সড়কের কাজে লাগানো হচ্ছে। এই মরা বালু তোলায় চরের ও সাঙ্গু নদের তীরের কোনো ক্ষতি হবে না।’
বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফা সুলতানা খান বলেন, বালু তোলার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। কেউ এ বিষয়ে তাঁকে অভিযোগও করেননি। তিনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।