নীলফামারী-২ (সদর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভাগনে শাহরিন ইসলাম চৌধুরী। তিনি নীলফামারী-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু আসনটি শরিক দলকে বিএনপি ছেড়ে দেওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে সদর আসনে নিয়ে আসা হয়েছে শাহরিনকে।
আজ সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শাহরিন ইসলামের পক্ষে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে নীলফামারী-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
আসনটিতে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল। দলীয় প্রার্থী হিসেবে তিনি ধানের শীষের পক্ষে প্রচার–প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। তবে নির্বাচন থেকে সরে না গিয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
নীলফামারী-২ আসনের বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মীর সেলিম ফারুক। তিনি বলেন, ‘আমরা সোমবার বিকেল চারটার দিকে দলীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া শেষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে শাহরিন ইসলাম চৌধুরীর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আসনটিতে শাহরিন ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এর আগে এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেও সময়ের মধ্যে তা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।’
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই শাহরিন ইসলাম চৌধুরী নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী হিসেবে জনসংযোগ ও প্রচার–প্রচারণায় ছিলেন। শাহরিন ইসলামের বাড়ি জেলার ডোমার উপজেলার গোমনাতি ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ছিলেন, মা সেলিমা ইসলাম বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় বোন।
সমঝোতার মাধ্যমে নীলফামারী-১ আসনটি শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশকে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। গত ২৩ ডিসেম্বর বিকেলে এ আসনে দলটির মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না শাহরিন ইসলামের অনুসারী বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তাঁকেই আসনটিতে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে ডোমার ও ডিমলা উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ-সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেন। নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা দাবি করে আসছিলেন, আসনটিতে শাহরিন ইসলামের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনি সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এত দিন নির্বাচনী এলাকায় ধানের শীষের পক্ষে ব্যাপক প্রচার–প্রচারণা চালিয়েছেন।
দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন কি না, এ বিষয়ে এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেলের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও নীলফামারী-২ সদর আসনে দলীয় কোনো বিভেদ থাকবে না বলে দাবি করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মীর সেলিম ফারুক। তিনি বলেন, ‘আসনটিতে বিএনপির প্রার্থীর জয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী।’