Thank you for trying Sticky AMP!!

বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে হুমায়রা

তেঁতুলিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্র

বাবা আবদুল হাকিম (৪৮) হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে মারা যান। রাতেই হাসপাতাল থেকে মরদেহ বাড়িতে নেওয়া হয়। আজ বুধবার সকালে বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেয় তাঁর মেয়ে হুমায়রা ইয়াসমিন হিমু (১৬)। পরে দুপুরে আবদুল হাকিমের মরদেহ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

Also Read: বাড়িতে মায়ের লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে দুই ভাই

প্রয়াত আবদুল হাকিম পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের কালান্দিগঞ্জ পত্নীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি তেঁতুলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ছিলেন। তাঁর মেয়ে হুমায়রা উপজেলার কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তেঁতুলিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে সে।

Also Read: মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষার হলে দুই বোন

পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে আবদুল হাকিম তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরের চৌরাস্তা বাজারে রিকশা-ভ্যান শ্রমিক সমিতির একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে বক্তব্য দেন। বক্তব্য শেষে মঞ্চ থেকে নেমে পাশের একটি হোটেলে চা পান করে অন্যদের সঙ্গে গল্প করছিলেন। এ সময় হঠাৎ করেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথেই মারা যান তিনি। পরে হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে জানান, তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে রাতেই তাঁর মরদেহ বাড়িতে নেওয়া হয়। আজ বেলা আড়াইটার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়। এর আগে সকাল ১০টার দিকে বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে যায় হুমায়রা। এ সময় শিক্ষক ও সহপাঠীরা তাকে মানসিকভাবে সান্ত্বনা দেয়।

Also Read: বাড়িতে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষার হলে স্বর্ণা

কেন্দ্র সচিব ও তেঁতুলিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত পরীক্ষার আগের রাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী হুমায়রা ইয়াসমিনের বাবা মারা যান। পারিবারিকভাবে তাঁর জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল বেলা আড়াইটায়। কিন্তু সকালে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। হুমায়রা বাড়িতে বাবার লাশ রেখে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় পরীক্ষা দিতে আসে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা ২৫ মিনিটের ছিল। সহপাঠী ও শিক্ষকেরা ওই ছাত্রীকে পরীক্ষা দিতে মানসিক শক্তি জোগান। পরীক্ষা শেষে সহপাঠীরা তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। পরে আমরাও তাঁর বাবার জানাজায় অংশ নিই।’

Also Read: মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থী