
যশোর শহরের খড়কি এলাকার মো. বাবু নামে এক যুবককে মারপিট করে হত্যা ও তাঁর ভাইকে জখমের অভিযোগ এনে কোতোয়ালি থানার সাবেক দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। ঘটনার আট বছর পর সোমবার বিকেলে যশোর আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়।
যশোর শহরের খড়কি বামনপাড়া এলাকার বাসিন্দা নিহত বাবুর ভাই নুরুজ্জামান মুন্না বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু কুমার মন্ডল অভিযোগটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী প্রবীর চক্রবর্তী।
মামলার আসামিরা হলেন কোতোয়ালি থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ জামিল আহম্মেদ, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবুল কালাম আজাদ ও বেজপাড়া মেইন রোড এলাকার শাহ আলমের ছেলে ওবাইদুল ইসলাম (রাকিব)। নিহত বাবু ও বাদী নুরুজ্জামান বামনপাড়ার কাঞ্চন মিয়ার ছেলে।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট বিকেলে আসামিরা নুরুজ্জামান মুন্না ও তাঁর ছোট ভাই বাবুকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যান। এরপর রাতে আসামিরা তাঁদের হকিস্টিক দিয়ে বেদম মারধর করেন। মারধরে বাবুর হাতের কবজি ও মুন্নার মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। পরে বাবুর হাতের কবজিতে ক্যানসার হয়ে ২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আওয়ামী লীগের শাসনামলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি। বর্তমানে পরিবেশ অনুকূলে আসায় বাদী আদালতে এ মামলা করেন।
নুরুজ্জামান মুন্না সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করি। আমার ভাই বাবু স্যানিটারি টেকনিশিয়ান ছিল। ওবাইদুল ইসলাম রাকিবের সঙ্গে আমার ভাই বাবুর গোলযোগ হয়। রাকিব পুলিশের সোর্স ছিল। যে কারণে তাঁর প্রভাবে পুলিশ আমার বাড়িতে অভিযানে আসে। বাড়িতে কয়েক বোতল ফেনসিডিল দেখিয়ে আমাকে ও আমার ভাইকে আটক করে। পরে রাতে পুলিশ হকিস্টিক দিয়ে আমাদের বেদম মারধর করে। এতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবু মারা যায়। ওই সময় সাবেক পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিলে প্রতিকারের বদলে উল্টো আমাকে বাড়িছাড়া হতে হয়। আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’