পটুয়াখালী জেলার মানচিত্র
পটুয়াখালী জেলার মানচিত্র

বাউফলে স্ত্রীকে হত্যার পর গভীর রাতে থানায় গিয়ে স্বামীর আত্মসমর্পণ

পটুয়াখালীর বাউফলে সালমা আক্তার (৩২) নামের এক মাদ্রাসাশিক্ষিকাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে তাঁর স্বামী সরোয়ার হোসেনকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টার দিকে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন সরোয়ার। এ সময় তাঁর সঙ্গে চার বছরের শিশুসন্তান ছিল।

এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সালমা আক্তারের ভাই মো. অলিউল ইসলাম বাদী হয়ে সরোয়ারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। এ মামলায় সরোয়ারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সালমা আক্তার বাউফল উপজেলার নুরাইনপুর নেছারিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর বাবার বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া গ্রামে। সরোয়ার একই উপজেলার নদমূলা গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ১২ বছর আগে তাঁদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, চাকরির সুবাদে চার বছর আগে বাউফলে আসেন সালমা ও তাঁর স্বামী সরোয়ার। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তাঁরা উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন।

সরোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দাম্পত্য কলহের জেরে গতকাল বিকেলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সরোয়ার ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে সালমার ঘাড়ে কোপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে লাশ ঘরে রেখে দরজা-জানালা বন্ধ করে সন্তান নিয়ে পালিয়ে যান সরোয়ার। গতকাল গভীর রাতে সন্তানসহ বাউফল থানায় হাজির হয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি। বিবেকের তাড়নায় তিনি আত্মসমর্পণ করতে হাজির হয়েছেন বলে এ সময় পুলিশকে জানান।

সরোয়ার হোসেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর সঙ্গে সংসার করা অবস্থায় সালমা অন্য এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন, এ রকম কাবিননামা দেখতে পান তিনি। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সালমা ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে কোপাতে চান। তখন সারোয়ার নিরুপায় হয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেন।

বাউফল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, সরোয়ার থানায় এসে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সালমার মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুটিকে তার মামার হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামি সরোয়ার হোসেনকে আগামীকাল শনিবার আদালতে পাঠানো হবে।