সিলেটের কিনব্রিজ এলাকায় অবৈধভাবে অবস্থানরত হকারদের সরিয়ে দিতে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম ও সাবেক সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। গতকাল শনিবার তোলা
সিলেটের কিনব্রিজ এলাকায় অবৈধভাবে অবস্থানরত হকারদের সরিয়ে দিতে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম ও সাবেক সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। গতকাল শনিবার তোলা

সিলেটের ফুটপাত ছেড়ে দিতে হকারদের ১৫ দিনের আলটিমেটাম

সিলেট নগরের সড়ক ও ফুটপাত থেকে হকারদের সরিয়ে দিতে অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার বেলা একটা থেকে তিনটা পর্যন্ত এ অভিযান চলে। এ সময় হকারদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অবৈধভাবে দখলে রাখা সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর হকাররা নগরের অধিকাংশ রাস্তা ও ফুটপাত দখলে নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। এ অবস্থায় নগরের বাসিন্দারা নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য হকার উচ্ছেদের দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে গতকাল ফুটপাত পরিদর্শনে যায়।

ফুটপাত পরিদর্শনের সময় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম ও সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁরা জানান, হকারদের পুনর্বাসনের জন্য সিটি করপোরেশন বেশ আগে লালদিঘীরপাড় এলাকায় একটা স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিল। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই নির্ধারিত স্থানটি আবার সংস্কারের পর ব্যবসার উপযোগী করে তোলা হবে। এরপর হকারদের ফুটপাত ছেড়ে ওই নির্দিষ্ট স্থানে চলে যেতে হবে।

ফুটপাত পরিদর্শনে যাওয়া ব্যক্তিরা আরও জানান, যেসব হকার নির্ধারিত স্থানে যাবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া আজ রোববার থেকে কোনো হকার রাস্তা দখল করে ব্যবসা চালাতে পারবেন না। বেঁধে দেওয়া ওই ১৫ দিনের মধ্যে হকাররা শুধু ফুটপাতে ব্যবসা করতে পারবেন। তবে ১৫ দিন পর পুনর্বাসনের জন্য নির্ধারিত স্থানে হকারদের চলে যেতে হবে।

অভিযানকারী দলটি নগরের কিনব্রিজ, দক্ষিণ সুরমা, কোর্ট পয়েন্ট, বন্দরবাজার ও জিন্দাবাজার এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে যান এবং হকারদের সঙ্গে কথা বলে ১৫ দিনের আলটিমেটামের কথা জানান। পাশাপাশি কিনব্রিজ ও দক্ষিণ সুরমার যমুনা মার্কেটের সামনে থেকে হকারদের সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে হকারদের জানানো হয়, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে লালদিঘীরপাড় এলাকায় হকারদের জন্য নির্ধারিত পুনর্বাসনের স্থানটি সংস্কারের পর ব্যবহার উপযোগী করে দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে নিজ উদ্যোগে স্থাপনা সরিয়ে হকারদের লালদিঘীরপাড়ে পুনর্বাসিত হতে হবে।

ফুটপাত পরিদর্শনের সময় সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, বর্তমান প্রশাসনের আন্তরিকতা ও উদ্যোগ আছে। তারা স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে ফুটপাত ও রাস্তা হকারমুক্ত করতে এগিয়ে এসেছে। নিশ্চয়ই সবার সহযোগিতায় শিগগির ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত হবে।

এ সময় জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম বলেন, ‘শহরটা আমাদের সবার। এই শহর যদি সুশৃঙ্খল থাকে, তাহলে এর সুফল আমরা সবাই পাব। এই শহরের প্রধান সমস্যা হকার সমস্যা। আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসেছি। এখানে কয়েক হাজার হকার আছে। পুনর্বাসনের যে জায়গা আছে, সেটা দ্রুত সংস্কার করে হকারদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা আশাবাদী, খুব অল্প সময়ে এ শহর হকারমুক্ত হবে।’

যোগাযোগ করলে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, হকারদের পুনর্বাসনের নির্ধারিত স্থানটি দ্রুততার সঙ্গে সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করা হবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর আর কোনো হকারকে ফুটপাতে বসতে দেওয়া হবে না।