
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় কয়েলের আগুনে দুটি গরুসহ কৃষকের ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। গতকাল রোববার রাতে বাগমারার নরদাশ ইউনিয়নের পানিয়া গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের নাম মজিবুর রহমান (৫৭)।
এদিকে পোড়া ঘর ও গরু দেখে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে প্রতিবেশী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ওই নারীর নাম জুলেখা বেগম (৪৮)। তাঁর স্বামী বকুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আজ সোমবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পোড়া বাড়ি ও গরু দেখে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়িতে নিয়ে আসার কিছুক্ষণ পর তাঁর মৃত্যু হয়।
আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মজিবুর রহমানের আধা পাকা বাড়ি ও গোয়াল পুড়ে গেছে। ঘরে থাকা মালপত্র ছাই হয়েছে। গোয়ালে মরে পড়ে আছে দুটি গরু। আরেকটি গরু পোড়া অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। গরুর পাশে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর স্ত্রী শাহিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘গরু মরে গেছে, ঘরোত থাকা ধান, কাপড়চোপড় পুড়ে গেছে। বাড়ির বেবাকে এক কাপড়ে আছি।’
মজিবুর রহমান বলেন, তিনি দিনমজুরি ও অন্যের জমিতে চাষাবাদ করে সংসার চালান; পাশাপাশি গরু পালন করতেন। মশার উপদ্রব থেকে বাঁচাতে প্রতি রাতে গোয়ালে কয়েল জ্বালিয়ে রাখতেন। গতকাল রাতেও তা–ই করেছিলেন। গভীর রাতে আগুন লেগে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মজিবুর রহমান বলেন, ‘এখন আমার কিচু থাকলো না। রাতে বউ–ছাওয়াল লিইয়্যা কোনটে থাকবো?’ তাঁর দাবি, এ ঘটনায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, মজিবুর গরিব কৃষক। অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে কোনো রকম জীবন যাপন করেন; পাশাপাশি গরু পালন করেন। আগুনে গরু ও বাড়িঘর পুড়ে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এখন খোলা জায়গায় থাকতে হবে।
বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে। খোঁজখবর নিয়ে দেখা হচ্ছে।