
রংপুরে টানা তাপপ্রবাহের পর স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে দুই দফায় এক ঘণ্টার বেশি সময়ে ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। ফলে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। এই বৃষ্টি পরিবেশ ও ফসলের জন্য ভালো বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকেরা।
রংপুর আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ৯ ও ১০ তারিখ রংপুরে ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল। এর পর থেকে তাপমাত্রা বাড়ছিল। গত শুক্রবার রংপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টির পর আজ রোববার সকালে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন তাপপ্রবাহের পর রংপুরে দুই দফায় ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
আজ সকালে শ্রমিক নিয়ে বোরো ধান কেটে উঠানে রাখছিলেন তারাগঞ্জের প্রামাণিকপাড়া গ্রামের কৃষক জরিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গরমে কৃষাণেরা কাজ কইরার চায় নাই। কয় দিন থাকি ধান পাকি আছে, কৃষাণ আবানে কাটির পাও নাই (কাটতে পারিনি)। রাইতো পানি কোনো হওয়ায় দ্যাওয়াটা (পরিবেশ) ঠান্ডা হইছে। ভোরে উঠি কৃষাণে বাড়িত যায় ডাকে আনি ঠান্ডায় ঠান্ডায় ধান কাটি নিনু (কেটে নিয়েছি)।’
জরিবুলের উঠানে কাজ করা শ্রমিক মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টি কোনা হওয়ায় শান্তিতে ঘুমবার পাছি। সকালে ঠান্ডা ঠান্ডায় ধান কাটনো (কেটেছি)। এর আগোত কয় দিন থাকি গরমে জান বের হবার নাগছে। কাম করি পাই নাই, রাইতো ঘুমিয়াও শান্তি হয় নাই। প্রতিদিন যদি রাইতো আনি ঝরি (বৃষ্টি) আর দিনোত খড়া থাকিল হয়্যা তাহলে, হামরা শান্তিতে কাম-কামাই করির পাইনো হয় (উপার্জন করতে পারব)।’
ইকরচালী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহাজাহান আলী বলেন, ‘রাতে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাঘাটের ধুলাবালু আজ কম উড়ছে। গাছপালায় জমে থাকা ধুলাবালুও ধুয়েমুছে গেছে। বিশুদ্ধ বাতাসে এখন প্রাণ ভরে যাচ্ছে। এমন বৃষ্টি পরিবেশের জন্য কল্যাণকর।’
তারাগঞ্জ কৃষি কর্মকর্তা ধীবা রানী রায় বলেন, ‘সব ফসলের জন্যই এই বৃষ্টি ভালো। এমন বৃষ্টিতে খেতে থাকা ধানের খুব বেশি ক্ষতি হবে না।’