
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সেনেরখামার গ্রামের দিনমজুর ইদ্রিস আলী। দিনমজুরি করে দৈনিক যে আয় হয়, তা দিয়ে খেয়ে না–খেয়ে কোনোরকমে চলে পাঁচ সদস্যের পরিবার। সেই পরিবারের ছেলে মিরাজ খন্দকার এবার এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
মিরাজদের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। কুপির আলোয় পড়াশোনা করতে হয়। অভাবের সংসারে বাধ্য হয়েই মিরাজ প্রতিবেশী শিশুদের প্রাইভেট পড়াত। নিজের পড়াশোনার খরচের পাশাপাশি অভাবের দিনে পরিবারকেও সহযোগিতা করত মিরাজ। সে সেনেরখামার রহমানীয়া দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
মিরাজের বাবা দিনমজুর ইদ্রিস আলী বলেন, ‘নিজের সন্তান জন্য বলছি না, মিরাজ ভদ্র ও পরিশ্রমী ছেলে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে মিরাজকে আমি কোনো গাইড বই কিংবা প্রাইভেট পড়তে দিতে পারিনি। পড়ার প্রতি অদম্য আগ্রহ ও মেধা দেখে ছেলের বিদ্যালয়ের শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম তাকে গণিত ও বিজ্ঞান পড়াতেন। অনেক কষ্ট করে সে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু অভাবের সংসারে ছেলেটাকে সামনের দিনগুলোয় আর পড়াতে পাড়ব কি না, সেই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’
মিরাজের বড় ইচ্ছা বুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করার। তবে সেই ইচ্ছা পূরণ হবে কি না, তা সে জানে না।
সেনেরখামার রহমানীয়া দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিরাজ খুব মেধাবী ছাত্র। কোনো পড়া একবার বুঝিয়ে দিলে সে সহজে ধরতে পারে। আমি সাধ্য অনুযায়ী তাকে সহযোগিতা করেছি। ওকে কলেজে পড়ানোর মতো অর্থনৈতিক সক্ষমতা তার পরিবারের নেই। সহযোগিতা পেলে ছেলেটি একদিন এই দেশের সম্পদ হবে।’