
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অতিদরিদ্রদের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির (ভিজিডি) কার্ডধারীদের কাছ থেকে এক ইউপি সদস্য ও বিএনপির এক নেতা ‘খরচের নামে’ টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভিজিডির উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও আজ বুধবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে (ভাইরাল)।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোবারক হোসেন ও পোগলদিঘা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামানের (রিপন) বিরুদ্ধে এই টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, একটি কক্ষের মধ্যে ওই ইউপি সদস্য ও ওই বিএনপি নেতা টেবিলের সামনে বসে আছেন। ভিজিডির কার্ডধারীরা বিএনপির নেতার হাতে টাকা ও বই দিচ্ছিলেন। এই বিএনপি নেতা ওই টাকা ও বই ইউপি সদস্যের হাতে দিচ্ছিলেন। টাকা বুঝে পেয়ে ইউপি সদস্যকে বইয়ের মধ্যে কিছু একটা লিখে আবারও ওই বিএনপি নেতা কার্ডধারীকে দিচ্ছিলেন।
ভিডিওতে কোনো এক কার্ডধারী বলছিলেন, ‘কত টাকা?’ তখন ওই কক্ষে থাকা লোকজন বলছিলেন, ‘২০০ টাকা করে।’ তখন ওই কার্ডধারী বলছিলেন, তাঁর কাছে টাকা নাই। তখন ওই কক্ষে থাকা লোকজনকে বলতে শোনা যাচ্ছিল, ‘একবারে ৬ হাজার টাকার চাল পাইতেছ আর ২০০ টাকা দিতে পারবা না।’
এই বিষয়ে একজন ভিজিডির কার্ডধারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। টাকা নেওয়ার বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘খরচের কথা বলে উনারা ২০০ করে টাকা নিয়েছেন। সবার কাছ থেকেই নিয়েছেন। তাই আমিও দিয়েছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নে প্রায় ৪৪২ জন ভিজিডি কার্ডধারী উপকারভোগী রয়েছেন। গত সোমবার থেকে ওই ইউনিয়নে ভিজিডির কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিতরণ চলছে। বুধবার ৫৮ জনের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়েছে।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য ইউপি সদস্য মো. মোবারক হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়, কিন্তু সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে পোগলদিঘা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়; কিন্তু তিনিও ফোন ধরেননি।
সরিষাবাড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিজা রিছিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি একটা ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেয়েছি। যেহেতু ভিডিও আছে, তার মানে ঘটনাটি সঠিক। এই মুহূর্তে অভিযানে গেলে হয়তো তাঁদের সেখানে পাওয়া যাবে না। ফলে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানতে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ করণীয় সম্পর্কে জানালেই, এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’