
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের উত্তাপ ক্যাম্পাসের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাস–সংলগ্ন বিনোদপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা–কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের উৎসব ভাগাভাগি করতে দলীয় নির্দেশে তাঁরা এখানে এসেছেন।
গতকাল বুধবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মীরা শামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নেন। সন্ধ্যার পর জমায়েত বড় হতে থাকে। আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই তাঁরা সেখানে অবস্থান করছেন। সেখানেই তাঁরা খাওয়াদাওয়া করেছেন। বিনোদপুর ছাড়া ক্যাম্পাস–সংলগ্ন কাজলা, চারুকলা, হরিজনপল্লী ও মেহেরচণ্ডী এলাকায় নেতা–কর্মীদের অবস্থান করতে দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকের বাঁ পাশে ক্যাম্পাসের প্রাচীরের পাশে রাস্তায় লম্বা শামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা। আর রাস্তার দক্ষিণ পাশে শামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নিয়েছেন জামায়াতে ইসলামী ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা। সকাল থেকে তাঁদের ক্যাম্পাসের বাইরে মোটরসাইকেলে মহড়া দিতে দেখা যায়। তবে অন্য এলাকাগুলোয় তাঁরা কেউ দাঁড়িয়ে ও কেউ বসে ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে হরিজনপল্লী এলাকায় অবস্থানকারী মতিহার থানা শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাকিব আলী বলেন, ‘আমরা রাবিয়ান। অনেক বছর পর ভোট হচ্ছে। আমরা মহানগরের নেতাদের নির্দেশে এখানে আছি। ভোটের উৎসব উপভোগ করতেই থাকছি এখানে।’
বিএনপির শামিয়ানার নিচে অবস্থান করা মহানগর বিএনপির বোয়ালিয়া থানার সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। ১৭ বছর দেশে কোনো ভোট হয়নি। আর ক্যাম্পাসে ভোট হচ্ছে সাড়ে তিন যুগ পরে। আমরা মূলত এখানে অবস্থান নিয়েছি উৎসব উদ্যাপন করার জন্য। কোনো ধরনের ঝামেলা করার জন্য নয়, এটা শিক্ষার্থীদের ভোট।’
মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এরশাদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘জামায়াতের নেতা–কর্মীরা সেখানে আছে বলেই আমরা এসব এলাকায় সজাগ আছি। তারা যেন প্রভাব বিস্তার না করতে পারে। আমাদের একধরনের সজাগ থাকার নির্দেশনা আছে।’
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আমানউল্লাহ আমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করেছেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের বিপরীতে প্রকাশ্যে নিজেদের মধ্যে অস্ত্র বিলি করছে জামায়াত–শিবিরের লোকজন।’
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে বেতার মাঠসংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কিছু লোক ছোট ছোট দলে বসে আছেন। পেছনে একটি শামিয়ানা দিয়ে আড়াল করা। সেখানে ভূরিভোজের আয়োজন চলছে। কথা বলে জানা গেল, স্থানীয় জামায়াতের নেতা–কর্মীরা দুপুরের খাবারের জন্য রান্না করছেন।
স্থানীয় জামায়াতের এক কর্মী মো. লিটু বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন হওয়ায় আমরা একত্র হয়েছি। এখানে একত্র হয়ে খাওয়াদাওয়া করছি। এখানে কোনো অস্ত্র নেই।’